সাগরে নিম্নচাপ: টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে প্লাবিত দুইশতাধিক বসতঘর

কক্সবাজার প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৫, ১২:০৩ পিএম

নিম্নচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে সাগরের পানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্লাবিত হয়েছে দুই শতাধিক বসতঘর। পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি, গাছপালা ও অবকাঠামো। প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেড়িবাঁধ, বালিয়াড়ি ও নানা স্থাপনা।

গত বৃহস্পতিবার থেকে বৈরী আবহাওয়ায় টানা চার দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সেন্টমার্টিন। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকট।

রোববার (২৮ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম জানান, অমাবস্যার জোয়ারে সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে এক থেকে তিন ফুট বেড়ে যায়। এতে দ্বীপের শতাধিক বসতঘর প্লাবিত হয়, লবণাক্ত পানিতে নষ্ট হয়েছে গাছপালা ও ঘরবাড়ি। ‘বারবার প্লাবনে দ্বীপবাসী আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। স্থায়ী সমাধান ছাড়া উপায় নেই’—বলেন তিনি।

টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শতাধিক ঘরবাড়ি পানির নিচে। দুর্ভোগে পড়েছেন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘জোয়ারের পানি বেড়িবাঁধ টপকে গ্রামে ঢুকে পড়ে। ফসলি জমিও নষ্ট হয়েছে। দ্বীপরক্ষার বাঁধ এখন চরম ঝুঁকিতে।’

স্থানীয়রা জানান, ২০২২ সালের জুনে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে শাহপরীর দ্বীপে প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে। কিন্তু অল্প সময়েই সিসি ব্লক ধসে পড়ে। তারা দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের টেকনাফ উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘অমাবস্যার জোয়ারে বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে পানি ঢুকেছে, ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু করা হবে।’

এদিকে টানা চার দিন ধরে সেন্টমার্টিনের সঙ্গে টেকনাফ নৌপথে যাত্রী ও মালবাহী ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপে তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফের কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে। সেন্টমার্টিনে খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় উপজেলা প্রশাসন সহযোগিতার উদ্যোগ নিচ্ছে।’

বিআরইউ