ভাঙ্গুড়ায় ১৬ বছর পর রেলের জলাভূমি উদ্ধার, এলাকাবাসীর স্বস্তি

মেহেদী হাসান, ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম

দীর্ঘ ১৬ বছর পর পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার রেলস্টেশনের পাশের প্রায় ১.৫২ একর রেলওয়ে জলাভূমি দখলমুক্ত হয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক প্রভাবে দীর্ঘদিন ধরে জলাভূমিটি সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ মির্জা (সিরাজগঞ্জ-৪) ও তার পরিবারের দখলে ছিল।

জানা যায়, ২০০৮ সালের পর এই রেলওয়ের আরএস দাগ নং ১১০৬-এর ১.৫২ একর জমি বিভিন্ন সময় লতিফ মির্জার মৃত্যুর পর তার ভাতিজা মির্জা কে.ই. তুহিনের নামে লিজ নবায়ন করা হয়। অথচ বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০২০ অনুযায়ী রেলের সম্পত্তি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে লিজ প্রদানের কথা। কিন্তু দীর্ঘদিন রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে নীতিমালা অমান্য করে জমিটি একই পরিবারের দখলে ছিল।

সরকার পরিবর্তনের পর গত ৫ আগস্ট সারা দেশে রেলওয়ের সম্পত্তি সংস্কার কার্যক্রম শুরু হলে বিষয়টি পুনরায় আলোচনায় আসে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পুরনো লিজ বাতিল করে নীতিমালা অনুসারে জলাভূমিটি পাশের জমির মালিক আলী আকবরকে চলতি বছরের জন্য লিজ প্রদান করা হয়।

তবে, ১৩ আগস্ট সাবেক এমপি আব্দুল লতিফ মির্জার ভাতিজা মির্জা কে.ই. তুহিন পাকশী রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি অফিসে উপস্থিত হয়ে পুনরায় নিজের নামে জলাভূমির বরাদ্দ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন। এ সময় তার অনুসারীদের উপস্থিতিতে অফিস প্রাঙ্গণে কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিও তৈরি হয়।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, নীতিমালা অনুযায়ী একই ব্যক্তিকে টেন্ডার ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। অতীতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, তা রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে হয়েছিল। বর্তমানে উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়া কোনো ধরনের লিজ প্রদান হবে না।

এরই মধ্যে ১৮ আগস্ট জলাভূমি এলাকায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও লিজপ্রাপ্ত আলী আকবর আনুষ্ঠানিকভাবে দখল গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, "আমি যেহেতু জলাভূমির পাশের জমির মালিক, তাই নিয়ম মেনে লিজ পেয়েছি। এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সমবায় ভিত্তিতে মাছচাষ করা হবে।"

স্থানীয় বেলাল হোসেন বলেন, "দীর্ঘদিন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জলাভূমিটি ভোগ দখল করলেও এখন নিয়মতান্ত্রিকভাবে তা মুক্ত হয়েছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।"

পাকশী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, "নিয়ম মেনে জলমহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে, আইনের বাইরে কোনো কিছু করা হয়নি।"

ইএইচ