আমীর খসরু

বাংলাদেশে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার আসবে

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২৫, ০৫:৩৫ পিএম

অনেকেই এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগে আসতে চায় এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, তারা একটি ফ্রি ফেয়ার ইলেকশনের অপেক্ষায় আছে। নির্বাচন হওয়ার পর তারা আসতে চায়, আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। সরকারকে কেন ৪ বিলিয়ন ডলারের জন্য আইএমএফ’র পেছনে ঘুরতে হবে? ৪ বিলিয়ন ডলার কোনো অর্থ না। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার আসবে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে।

শনিবার (২৪ মে) ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) আয়োজিত এক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। 'বাংলাদেশের রাজনৈতিক আলোচনায় পুঁজিবাজার: দর্শন ও অনুশীলন' শীর্ষক এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয় ডিএসই কার্যালয়ে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন বিএসইসি কমিশনার মো. মোহসিন চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. মোবারক হোসাইন, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ, আইসিএমএবির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

আমীর খসরু বলেন, একটা সময় ক্যাপিটাল মার্কেট ভালো প্রগ্রেস করেছিল। গত ১৫ বছরের কথা বলার দরকার নেই, আপনারা সবাই জানেন। বাংলাদেশকে যদি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয় আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করেন, আমি বলবো এক নম্বর হলো বিনিয়োগ, দুই নম্বর হলো বিনিয়োগ এবং তিন নম্বরও হলো বিনিয়োগ। এর বাহিরে কিছু নেই। এই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে আমাদের বিনিয়োগে ফোকাস করতে হবে। বিনিয়োগ না হলে কীভাবে হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশের সরকার ও বেসরকারি বিনিয়োগের অর্থের উৎস হতে হবে ক্যাপিটাল মার্কেট। ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে সরকারের ঋণ। ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে প্রাইভেট সেক্টরের ঋণ, দুটিই সম্ভব। আমাদের দেশে সরকারের ঋণের জন্য আইএমএফ’র পিছে ঘুরছি। আমরা ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য আইএমএফ’র পিছে পিছে ঘুরছি। একটা দেশের জন্য ৪ বিলিয়ন ডলার কোনো টাকা না। কিন্তু আমরা ৪ বিলিয়ন ডলারের জন্য আইএফএম, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কাছে যাচ্ছি।

আমীর খসরু বলেন, বিশ্বে বছরে ক্যাপিটাল মার্কেটে ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার এলোকেশন হয়। সর্বভৌম তহবিল, ইন্স্যুরেন্স, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে থেকে এই অর্থ আসে। এর মধ্যে ভিয়েতনামেই ৩০০ বিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশের সংখ্যাটা আমি না বললেই ভালো। ৩০০ বিলিয়ন না বাংলাদেশে ১০০-২০০ বিলিয়ন ডলার আনতে পারলেই বাংলাদেশের বিনিয়োগের চিত্রটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?

তিনি বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটকে পলিটিক্যাল ওনারশিপের মধ্যে আনতে হবে। ক্যাপিটাল মার্কেটকে পলিটিক্যাল ওনারশিপের মধ্যে আনতে হলে অবশ্যই মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতিকে একসঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। এটার জন্য ক্যাপিটাল মার্কেটে পলিটিক্যাল ওনারশিপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাংলাদেশে এ জায়গায় কেউ হাত দিতে চায় না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বাংলাদেশের ক্যাপিটাল মার্কেট বিকেম এ ক্যাসিনো, ইজ নট এ ক্যাপিটাল মার্কেট। একটা গ্রুপ ক্যাসিনোর মালিক। আপনি ক্যাসিনোতে ঢুকবেন, খেলবেন। কিন্তু দিনের শেষে প্রফিট ক্যাসিনো মালিকের। কেউ হারবে, কেউ জিতবে। দিন শেষে সব মুনাফা ক্যাসিনো মালিকের কাছে যাবে। আপনি তো ক্যাপিটাল মার্কেটে সেটা করতে পারছেন। বাংলাদেশে এটা বিশেষ করে ঘটেছে গত ১৫ বছরে।

তিনি বলেন, আমার পরিচিত অনেকেই এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগে আসতে চায়। তারা একটি ফ্রি ফেয়ার ইলেকশনের অপেক্ষায় আছে। নির্বাচন হওয়ার পর তারা আসতে চায়, আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। অনেকে ১০ বিলিয়ন ডলার ফান্ড ম্যানেজ করেছে, অনেকে ২০ বিলিয়ন ডলার ফান্ড ম্যানেজ করেছে। তারা বাংলাদেশে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করতে চায়, উৎপাদান খাতে বিনিয়োগ করতে চায়, সেবা খাতে বিনিয়োগ করতে চায়।

তিনি আরও বলেন, সরকারকে কেন ৪ বিলিয়ন ডলারের জন্য আইএমএফ’র পেছনে ঘুরতে হবে। ৪ বিলিয়ন ডলার কোনো অর্থ না। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার আসবে এ মার্কেটের মাধ্যমে। এ ফান্ডের সুবিধা হলো এটা দীর্ঘ মেয়াদের, সুদের বিষয় নেই।

আরএস