চলতি বছর গরুর মাংস ও ইলিশ মাছের বাজারে বিরল এক বিভাজন দেখা দিয়েছে। ময়মনসিংহের বিভিন্ন কাঁচা ও খুচরা বাজারে গরুর মাংসের দাম এখন প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। কিছু স্থানে ৭০০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অনেক ভোক্তা গরুর মাংসের দিকেই ঝুঁকছেন।
অন্যদিকে, ঐতিহ্যবাহী জাতীয় মাছ ইলিশের দাম এবার আকাশছোঁয়া। বাজারে ৪৮০ থেকে ৬৫০ গ্রামের মাঝারি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১,৪০০ থেকে ১,৮০০ টাকায়। বড় আকারের (৯০০–১,২০০ গ্রাম) ইলিশের দাম পৌঁছেছে ১,৮০০ থেকে ২,০০০ টাকা পর্যন্ত। কিছু বাজারে এক কেজি ওজনের বড় ইলিশ ৩,০০০ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে।
গত এক বছরে ইলিশের দাম ৩৫–৩৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে, যা গরুর মাংসের দামের চেয়ে অনেক বেশি। সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও বাজার সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে রাখছে বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গরুর মাংস এখন ৭০০–৭৫০ টাকা কেজি দরে মিললেও মাঝারি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১,৬০০–১,৯০০ টাকায় এবং বড় আকারের ইলিশের দাম ২,২০০ থেকে ৩,০০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। ফলে ৩ কেজি গরুর মাংসের দামে একটি মাঝারি বা বড় ইলিশ মাছের দাম সমান হয়ে যাচ্ছে, যা মধ্যবিত্তের আয়োজনে গরুর মাংসকেই আবার সাশ্রয়ী পছন্দ হিসেবে তুলে ধরছে।
এ বিষয়ে বাজার বিশেষজ্ঞ ও ময়মনসিংহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম বলেন, “ইলিশ তো প্রতিদিনের মাছ নয়। এর দাম ২,০০০ টাকার বেশি হওয়া একেবারেই উচিত নয়। বাজার স্থিতিশীল রাখতে দ্রুত সরকারি তদারকি ও কার্যকর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।”
ভোক্তাদের একাংশ মনে করছেন, নিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থা ছাড়া সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বারবার হুমকির মুখে পড়বে এবং পুষ্টি ও ঐতিহ্যবাহী খাবার তালিকাও সীমিত হয়ে যাবে।
ইএইচ