৪৩ বছরে ইবিতে চার সমাবর্তন

ফারহানা নওশিন তিতলী, ইবি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২, ০৪:২২ পিএম

স্বাধীনতা পরবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার ৪৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সমাবর্তন হয়েছে মাত্র চার বার। নিয়মিত সমাবর্তন না হওয়াতে গ্রাজুয়েটদের কালো গাউন জড়িয়ে আকাশে ক্যাপ উড়িয়ে সমাবর্তন উদযাপনের স্বপ্ন যেন দীর্ঘদিন স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছরই সমাবর্তন আয়োজনের কথা থাকলেও পঞ্চম সমাবর্তনের বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই প্রশাসনের।

রেজিস্ট্রার সূত্রে জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৩ সালে, দ্বিতীয় সমাবর্তন ১৯৯৯ সালে এবং তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। দীর্ঘ ১৬ বছর পর সর্বশেষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারী। চার বছর পেরিয়ে গেলেও পঞ্চম সমাবর্তনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এমনকি এ বিষয়ে কোনো পরিকল্পনাও নেই বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম।

এদিকে নিয়মিত সমাবর্তন না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অর্জিত ডিগ্রির মিলছে না আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মলগ্ন থেকেই। সমাবর্তন অনুষ্ঠান নিয়মিত না হওয়ার পেছনে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সাবেক এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি দায়িত্বশীল হয় তাহলেই সমাবর্তন অনুষ্ঠান নিয়মিত আয়োজন করতে পারে। এতো গুলো বছরে মাত্র চারটি সমাবর্তন প্রশাসনের গাফিলতি ছাড়া আর কিছুই নয়। এছাড়া প্রভিশনাল ও অনলাইনের মাধ্যমে সনদপ্রাপ্তির বিষয়েও দাবি জানান তারা।

আইসিটি বিভাগের সাবেক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের চেয়ে তাদের নিজেদেরকে নিয়ে বেশি ব্যস্ত। যার কারনে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি শুধু চাওয়াতেই সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের দায়িত্বের প্রতি আরও যত্নশীল হওয়া উচিত।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ চতুর্থ সমাবর্তনে স্নাতক ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষ এবং স্নাতকোত্তর ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সমাবর্তনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক মূল সনদ পেয়েছেন। এছাড়া ২৩৬ তম সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এম ফিল ও পিএইচডি ডিগ্রিধারী মূল সনদ হাতে পেয়েছেন। এরপর চারটি ব্যাচ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করে ফেলেছেন। কয়েকটি বর্ষের এমফিল ও পিএইচডি গবেষকরা নিয়েছেন তাদের ডিগ্রি। তবে তারা আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি বঞ্চিত।

এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, কোভিড পরিস্থিতির পর বর্তমানে দেশে সব ধরনের সংকট চলছে। দেশের স্বার্থে সরকার আমাদের সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। যেহেতু সমাবর্তন একটা বড় বাজেটের প্রোগ্রাম সেহেতু আমাদের সময় নিয়েই এই বিষয়ে আগাতে হবে। সমাবর্তন নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা আছে তবে এখনই কিছু বলা যাচ্ছেনা। এ বিষয়ে আমরা সর্বসম্মতিক্রমেই সিদ্ধান্ত নেবো।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম বলেন, এখন আমাদের সমাবর্তন নিয়ে কোন পরিকল্পনা নেই। নিয়মানুযায়ী প্রতিবছরই সমাবর্তন হওয়া উচিত তবে পরিস্থিতির জন্য হয়ে ওঠে না। আমরা পরবর্তীতে পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেখবো। তাছাড়া ফিন্যানসিয়ালিও অনেক ব্যাপার আছে।

কেএস