ধর্মীয় অপব্যাখা-রাজনৈতিক কারণে শিক্ষাক্রমের বিরোধীতা: শিক্ষামন্ত্রী

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৩, ০৬:৫৮ পিএম

রাজনৈতিক কারণে আর ধর্মের অপব্যবহারের মাধ্যমে মগজ ধোলাই অব্যাহত রাখতেই নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বিরোধীতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

বুধবার (২৯ মার্চ) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় শিক্ষাক্রম বিস্তরণ ও দেশব্যাপী প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।

জাতীয় শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের বিরোধীতার বিষয় উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘নির্বাচনের বছর, রাজনৈতিক বিরোধীতার কারণে বিরোধীতা করা হচ্ছে। আর আরেকটি পক্ষ রয়েছে, যারা ধর্মটাকে অপব্যাবহার করে সংকীর্ণ রাজনৈতিক ফয়দা হাসিলের জন্য বিরোধীতা করছে।

তিনি আরও বলেন, ‘পদ্মাসেতু নিয়ে যেমন ষড়যন্ত্র হয়েছে, তেমনি নতুন শিক্ষাক্রম নিয়েও অনেক বাধা তৈরি হচ্ছে। আমাকে এবং যারা বাইয়ের লেখক, জাফর ইকবাল ভাইসহ ( শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল) তাদের বেশ কয়েকজনকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন— চামড়া মোটা করতে হবে, পিঠে কুলা বাধতে হবে। তবে  আমরা দমে যাবার পাত্র নই। আমাদের দেশকে এগিয়ে নেবার জন্য, নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যত নির্মাণ করবার জন্য, আর যে স্বপ্ন নিয়ে এতো ত্যাগের বিনিময়ে দেশটি তৈরি হয়েছিলো সেই স্বপ্নের জায়টিতে পৌঁছবার জন্য আমাদের যা কিছু এখন করণীয়, তা আমাদের করতেই হবে, এটা আমাদের কর্তব্য, এটা আমাদের দায়িত্ব, এটা আমাদের পালন করতেই হবে।’

কোচিং ও নোট-গাইডের কারণে অনেকে বিরোধীতা করছেন উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কোচিংয়ের সব কিছু খারাপ তা তো নয়, কোচিং কথাটাও খারাপ নয়, বাণিজ্য কথাটাও খারাপ নয়, তবে যারা শ্রেণিকক্ষে পাঠদান না করে বাধ্য করেন শিক্ষার্থীকে কোচিংয়ে যেতে, সেখান থেকে রোজগারটা করেন অতিরিক্ত। সেখানে সমস্যা। এই কাজ যারা করেন শিক্ষার্থীদের কোচিং করান তাদের একটি মহাভয়, ভয়টি অমূলক নয়। কারণ এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হয়ে গেলে কোচিং দরকার হবে না। আরেকটি পক্ষ আছে নোটবই-গাইড বই, তাদেরও ভয় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হয়ে গেলে তো নোটবই-গাইড বই দরকার হবে না। তাদের ভয়টিও অমূলক নয়, এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হলে নোটবই-গাইড বই প্রয়োজন হবে না।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জাফর ইকবাল, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মোলাইমান খান, ইউনিসেফের চিফ অব এডুকেশন দীপা শংকর।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ফারুক, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সারাদেশের প্রধান শিক্ষকরা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

এআরএস