ববিতে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম উদ্ভাস

ববি প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৪, ১২:৫৩ পিএম

বৈশাখের ঘামঝরা তপ্ত দুপুরে গনগনে সূর্যের সবটুকু উত্তাপ যেন আলিঙ্গন করে রেখেছে রক্তিম পুষ্পরাজি। দূর থেকে দেখে মনে হবে ঝড়ে যাওয়া অজস্র পাপড়ি যেন বিছিয়ে রেখেছে লাল গালিচা।

প্রচণ্ড তাপদাহের মাঝে তৃষ্ণার্ত ক্লান্ত পথিক সেই অনিন্দ্য সৌন্দর্যের আঁধারের নিচে থমকে দাঁড়ায়, হারিয়ে যায় মায়াবী এক জালে। বলছি রক্তের মতো রাঙা নয়ন জুড়ানো কৃষ্ণচূড়া ফুলের কথা।

নিষ্প্রাণ রুক্ষতা ছাপিয়ে দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম বিদ্যাপীঠ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে গাঢ়-লালের বিস্তার করেছে কৃষ্ণচূড়া। ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে নিজেকে মেলে ধরেছে স্বমহিমায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আনাচে-কানাচে এক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জানান দিচ্ছে সে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী বা ক্যাম্পাসের মাঝে হেঁটে চলা যেকোনো পথচারীরই হৃদয় কাড়ে নয়নাভিরাম এসব কৃষ্ণচূড়া ফুল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইসলাম সিমু বলেন, ক্যাম্পাসের কৃষ্ণচূড়া গাছ সেজে উঠেছে রক্তিম ফুলে। মন জুড়ানো ফুলগুলো থেকে চোখ ফেরানো কঠিন হয়ে যায়। ক্যাম্পাসে হাঁটতে গিয়ে কবি শামসুর রাহমানের মতোই মনে হয়, ফুলগুলো যেন আমাদের চেতনারই রঙ।

গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে প্রকৃতি যখন রসহীন হয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই কৃষ্ণচূড়া তার অপার সৌন্দর্য নিয়ে হাজির হয়েছে আমাদের মাঝে। কাঠফাটা দুপুরে কোকিলের মায়াবী কণ্ঠে গান, ঝিঁঝি পোকার ডাক আর চোখের সামনে রক্তাভ কৃষ্ণচূড়া তপ্ত রোদের মাঝেও এক ঝিলিক আনন্দ দিচ্ছে হৃদয়ে।

সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, সবুজ এই ক্যাম্পাসের মাঝে কৃষ্ণচূড়ার লাল আভা দেখে মনে হয় কেউ যেন সবুজের মাঝে একে দিয়েছে লাল রং। সবুজ এই প্রাঙ্গণে কৃষ্ণচূড়া যেন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকারই প্রতিচ্ছবি। কৃষ্ণচূড়া দেখলে আমার মনে হয় নীল আকাশের বুকে প্রকৃতি এক রঙিন আলপনা একে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। এটি ফাবাসিয়ি পরিবারের অন্তর্গত। এর আদি নিবাস আফ্রিকার মাদাগাস্কার। ১৮২৪ সালে সেখান থেকে প্রথম মুরিটাস, পরে ইংল্যান্ড এবং শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিস্তার ঘটে। ধারণা করা হয়, কৃষ্ণচূড়া ভারত উপমহাদেশে এসেছে তিন থেকে চারশ বছর আগে। বহুকাল ধরে রয়েছে বাংলাদেশে।

ইএইচ