নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উনিশে পদার্পণ

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ১০, ২০২৪, ০৭:৪১ পিএম

ত্রিশালের নামাপাড়ায় জাতীয় কবির স্মৃতি বিজড়িত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দেড়যুগ পেরিয়া উনিশতম বর্ষে পদার্পণ করেছে।

দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীত সহযোগে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উনিশতম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস শুরু হয়।

পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহামান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে নবনির্মিত কলা অনুষদ ভবনের সামনে পায়রা উড়িয়ে বর্ণাঢ্য আনন্দ র‍্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ‘গাহি সাম্যের গান মুক্তমঞ্চে’ এসে সমবেত হয়।

মুক্তমঞ্চে কেক কেটে আলোচনা সভা শুরু হয়। উনিশতম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের টুপি পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলেই র‍্যালি ও কেক কাটায় অংশগ্রহণ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- সাবেক মুখ্যসচিব ও সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ এমপি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা তো বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি শিক্ষার জন্য, পরিপূর্ণ মানুষ হওয়ার জন্য। গবেষণার মাধ্যমে উন্নয়নের জন্য। তাই শিক্ষা, গবেষণা উন্নয়ন আসলেই একসুতায় গাঁথা। শিক্ষা-গবেষণা-উন্নয়নের এই চমৎকার ভাবনার জন্য উপাচার্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে থাকার ইচ্ছের কথা পুনর্ব্যক্ত করে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের স্বপ্ন ছিল বিশ্ব ভারতীর মতো একটি প্রতিষ্ঠান এখানে গড়ে তোলা। আমি জানি মাত্র সাড়ে ৫৬ একর জায়গা দিয়ে বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠান হবে না। তাই আপনারা দ্বিতীয় যে ক্যাম্পাসের কথা চিন্তা করছেন এটির জন্য কাজ করেন। আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় যারা ছিলাম তারা এবারো একত্রে থাকবো।

সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক পরিবেশকে আমরা সুনিশ্চিত করতে চাই। একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় করবার যে অভিযাত্রা সেই অভিযাত্রায় সবাই একত্রিত হয়েছি। এখানে কাজী নজরুল ইসলাম প্রথম পা দিয়েছিলেন। তাই এটি একটি পুণ্যভূমি। এখানে আমরা একটি বিশ্ববিদ্যালয় করতে পেরেছি। প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত শেখ হাসিনা উদার হাতে সাহায্য দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন। আমাদের শুধু সেটি গ্রহণ করতে হবে।

ভারতের শান্তি নিকেতনের আদলে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তুলতে বিকেন্দ্রীকরণের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, আমাদের এই ক্যাম্পাসের খুব কাছেই বিচুতিয়া ব্যাপারী বাড়ি, একটু দূরে রফিজউল্লাহ দারোগার বাড়ি। এসব জায়গায় নজরুল ছিলেন। জায়গাগুলো এখন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাদুঘর হয়ে আছে। এগুলো যদি আমাদের ক্যাম্পাসের সঙ্গে যুক্ত করা যায় তাহলে একদিকে যেমন জায়গা গুলোর সঠিক সংরক্ষণ সম্ভব ঠিক তেমনি ভাবে আমাদের ক্যাম্পাসের কলেবরও বৃদ্ধি করা সম্ভব। এ বিষয়টি সরকারকে ভেবে দেখতে হবে।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান, বুয়েটের প্রাক্তন অধ্যাপক ও বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের মহাসচিব প্রকৌশলী রাশেদুল হাসান শেলী।

রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীরের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আল মাহমুদ কায়েস এবং সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুল ইসলাম রিয়েল সরকার।

এ সময় বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, দপ্তর প্রধানসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ইএইচ