চার দফা দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে রাজপথে অনড় অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার (১৬ মে) সকালেও তারা অবস্থান চালিয়ে যান। রাজপথেই বসার প্রস্তুতি, রাজপথেই গণঅনশনের ঘোষণা—সবকিছুতেই দৃঢ় সংকল্পের বার্তা।
সকাল ১০টায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচির সময় থাকলেও তা শুরু হয় ১১টায়। এ নিয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন বলেন, ‘টানা অবস্থানে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। জুমার নামাজের পর আমরা গণঅনশনে বসব। সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কেউ ক্যাম্পাসে ফিরবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি, আন্দোলন দমনে নানা কৌশল নেওয়া হতে পারে। কিন্তু আমাদের সন্তানদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ছি না। কেউ তুলে নিলেও আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
আন্দোলনের চার দফা দাবি হলো—
- আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করা,
- জবির প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন,
- দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে,
- ১৪ মে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
এই দাবিগুলোর পক্ষে শুধু শিক্ষার্থীরা নন, একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১৪ মে) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে লংমার্চে গেলে কাকরাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে। আহত হন বহু শিক্ষক-শিক্ষার্থী।
এরপর বেলা ২টা থেকে কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। সেই অবস্থান আজ তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে।
আজকের কর্মসূচিতে অংশ নিতে সকাল থেকে জবি’র বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা কাকরাইলে জড়ো হন। উপস্থিত হয়েছেন শিক্ষক সমিতির নেতারাও।
এদিকে সড়কজুড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা একাধিক স্লোগান দিতে থাকেন: ‘রক্ত লাগলে রক্ত নে, জগন্নাথে হল দে’, ‘তুমি কে আমি কে? জবিয়ান জবিয়ান’, ‘আপস নয়, সংগ্রাম’, ‘জবিয়ানের রক্ত বৃথা যেতে দেবে না।’
সকাল হোক, দুপুর হোক কিংবা রাত—কাকরাইলে এখন শুধু একটি শব্দ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে: “দাবি পূরণ না হলে ফিরবো না।”
বিআরইউ