ইডেন কলেজে হল ক্যান্টিনের খাবারে পোকামাকড়, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

মোকার্রেমা খাতুন, ইডেন কলেজ প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৫, ০৯:১১ পিএম

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ইডেন মহিলা কলেজের আবাসিক হলগুলোর খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। নিয়মিত নিম্নমানের খাবার, রান্নায় পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং পুষ্টিহীন একঘেয়ে মেন্যুর কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিদিনের খাবারে স্বাদ-গন্ধ থাকে না, ডাল ও সবজি অত্যন্ত পাতলা এবং মাছ বা মাংস প্রায় অনুপযোগী। অনেক সময় পচা মাছ, বাসি তরকারি এমনকি খাবারের মধ্যে পোকামাকড়ও পাওয়া যায়। এসব খেয়ে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আয়েশা সিদ্দিকা হলের শিক্ষার্থী সুরভী আক্তার আমার সংবাদকে বলেন, “প্রতিদিন একই ধরনের নিম্নমানের খাবার খেয়ে আর খাওয়ার আগ্রহ থাকে না। একবার খাবারে তেলাপোকা পেয়েছিলাম। বাধ্য হয়ে প্রায়ই বাইরে থেকে খাবার কিনে খেতে হয়, কিন্তু প্রতিদিন সেটা সম্ভব হয় না।”

খোদেজা খাতুন হলের শিক্ষার্থী নাহিদা সিকদার সিমু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, “একবার কলমি শাকের মধ্যে ছোট শামুক পেয়েছিলাম। রান্নায় কোনো মান বজায় রাখা হচ্ছে না, যাঁরা রান্না করছেন তারাও দায়িত্বে অবহেলা করছেন।”

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আজকেই আয়েশা হলে খাবার নিতে গিয়ে দেখেছি মাছির ভিড়। ক্যান্টিনের মামাকে বললে তিনি উল্টো চোখ রাঙিয়ে কথা বলেন, খাবার ঢেকে রাখার উদ্যোগই নেননি।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ ড. শামসুন্নাহার আমার সংবাদকে বলেন, “আমরা প্রতিটি হলের সুপারদের নির্দেশ দিয়েছি শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করে খাবারের মান ও পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে।”

শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, খাবারের মান উন্নয়নে নির্দিষ্ট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে এবং কর্তৃপক্ষের নিয়মিত তদারকি বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে একটি ‘ফুড মনিটরিং কমিটি’ গঠনেরও দাবি জানিয়েছেন, যাতে শিক্ষার্থীরাও পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন।

উল্লেখ্য, ইডেন মহিলা কলেজে কয়েক হাজার ছাত্রী আবাসিকভাবে বসবাস করেন, যারা মূলত দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে রাজধানীতে এসেছেন। হলের খাবারই তাদের প্রধান ভরসা, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পাওয়াই যেন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।

ইএইচ