বাকৃবির টেকনিক্যাল সহায়তায় অ্যান্টিবায়োটিক-মুক্ত ব্রয়লার উৎপাদনের যাত্রা শুরু

বাকৃবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০৬:৫৬ পিএম

অ্যান্টিবায়োটিক-মুক্ত ব্রয়লার উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ও কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) টেকনিক্যাল সহায়তায় ক্ষুদ্র খামারিদের সমস্যা সমাধান এবং পোল্ট্রির মান নিয়ন্ত্রণে ময়মনসিংহে ‘মানু ফার্মস ভাবখালী হাব’-এর উদ্বোধন করা হয়েছে।

বুধবার সকাল ১১টায় বাকৃবি সংলগ্ন ভাবখালীতে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রায় ১৫০ জন খামারি উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মানু ফার্মস-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মুহাম্মদ শাহীন।

প্রধান অতিথি ছিলেন কেজিএফ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. নাথু রাম সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাকৃবির গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাউরেস-এর সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাভিদুল হক ভূঞা, পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী, একই বিভাগের অধ্যাপক ও প্রকল্প পরিচালক ড. সুবাস চন্দ্র দাস, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম, ব্র্যাক ব্যাংকের এগ্রিকালচার ফাইনান্সের প্রিন্সিপাল অফিসার মো. ইসমাইল হোসেন, ইনফো ওয়ার্ল্ড গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. শফিকুল ইসলাম তুহিন, সিইও কর্নেল (অব.) হোসাইন মাহমুদ চৌধুরী এবং ডিএমএ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান রাহমান।

মুহাম্মদ শাহীন বলেন, “২০১১ সালে প্রান্তিক খামারিদের জন্য মানু ফার্মসের যাত্রা শুরু হয়। আমরা কৃষিখাতে প্রযুক্তির সহজ সমাধান আনতে কাজ করছি। খামারে মুরগির সুস্থতার জন্য পরিষ্কার ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ দরকার। এজন্য আমরা একটি ডিভাইস ও মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেছি, যার মাধ্যমে তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, আলো ও অ্যামোনিয়া গ্যাস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এমনকি দূর থেকেও স্প্রিঙ্কলার চালু করা সম্ভব।”

তিনি জানান, ভাবখালী হাবে পোল্ট্রি ও গবাদিপশুর জন্য সপ্তাহে তিনদিন (বিকেল ৪টা–৬টা) বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা এবং পাইকারি দামে খামারসামগ্রী পাওয়া যাবে। “আমাদের লক্ষ্য—খামারিদের টিকিয়ে রাখা ও লাভবান করা, যাতে দেশ এগিয়ে যায়,”—বলেন শাহীন।

অধ্যাপক শওকত আলী বলেন, “আমাদের এমন মার্কেটিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে ক্ষুদ্র খামারিরা ক্ষতির মুখে না পড়ে। দেশের ৬০ থেকে ৭০ লাখ মানুষ সরাসরি পোল্ট্রি খাতে যুক্ত, রেস্টুরেন্ট, হোটেল মিলিয়ে পরোক্ষভাবে প্রায় ১ কোটি মানুষ এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।”

অধ্যাপক জাভিদুল হক ভূঞা বলেন, “এমন একটি ব্র্যান্ড তৈরি করুন যাতে ব্রয়লার ও ডিম নিরাপদ হয়। খাবার ও ওষুধের রেসিডিউ মানুষের শরীরে জমে মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে। অর্গানিক ফার্মিং করলে মান ও দাম—দুটোই ভালো হবে।”

অধ্যাপক সুবাস চন্দ্র দাস বলেন, “যদি শুধু মুনাফাই উদ্দেশ্য হয়, তাহলে আজকের এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে। প্রকল্পটি সফল হবে তখনই, যখন আপনারা সফল হবেন।”

উল্লেখ্য, মানু ফার্মস-এর নিজস্ব মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে খামারিরা দৈনন্দিন কার্যক্রম, আর্থিক হিসাব-নিকাশ ও পশুর স্বাস্থ্যব্যবস্থাপনা করতে পারেন।

ইএইচ