সাজিদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ইবিতে বিক্ষোভ, রাবি ও ঢাবি শিক্ষার্থীদের সংহতি

ফারহানা নওশিন তিতলী, ইবি প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ০৪:০০ পিএম

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহকে শ্বাসরোধে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ইবির শিক্ষার্থীরা। 

একই দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরাও সংহতি প্রকাশ করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

সোমবার বেলা ১১টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। 

একই সময়ে ‘রাবিস্থ মিল্লাত পরিবার’ ব্যানারে রাবির প্যারিস রোডে এবং ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মিল্লাতিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’-এর উদ্যোগে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ইবি শিক্ষার্থীরা বলেন, “কখন, কাকে এবং কীভাবে উচ্চতর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হবে— তা আজকের মধ্যেই পরিষ্কার করতে হবে। যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুনিদের শনাক্ত করে বিচার করতে না পারেন, তবে দায়িত্বে থাকার নৈতিকতা নেই।”

রাবির মানববন্ধনে শিক্ষার্থী সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, “সাজিদ আবদুল্লাহ ছিলেন তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্র, কোরআনে হাফেজ, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং জুলাই বিপ্লবের প্রথম সারির কর্মী। তাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ১০ দিন পার হলেও এখনো প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি— এটি প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা। প্রয়োজনে আমরা ইবিতে গিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, “এমন একটি এলাকা, যেখানে ছাত্র হলে নিরাপত্তা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত আলো ও সিসিটিভি থাকার কথা। অথচ সেখানে কোনো সিসি ক্যামেরা ছিল না— এটা খুবই উদ্বেগজনক। আমরা এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের উচ্চতর তদন্ত দাবি করছি এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানাই।”

এ বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “খুনিদের বিচার নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করবে। আজ (৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টায় জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে। সভায় শিক্ষার্থীদের দাবির আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।” তিনি শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণেরও আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, রোববার (৩ আগস্ট) প্রকাশিত ফরেনসিক রিপোর্টে সাজিদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে শ্বাসরোধে হত্যা উল্লেখ করা হয়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রাথমিক ময়নাতদন্তের সময় থেকে আনুমানিক ৩০ ঘণ্টা আগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিংস কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়, যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উচ্চতর তদন্তের সুপারিশ করে।

রাত ৮টার দিকে ফরেনসিক রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরপরই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

ইএইচ