ডায়াবেটিক রোগীদের কি চিনির পরিবর্তে গুড় খাওয়া স্বাস্থ্যকর?

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২২, ০১:১৯ পিএম

অনেকের ধারণা, চিনি বেশি খেলেই নাকি শরীরে ডায়াবিটিস ধরা পড়ে এটা সত্য নয়। তবে এক বার যদি কারও শরীরে এই রোগ বাসা বাঁধে তাহলে চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবারে রাশ টানতেই হবে। একেবারে বন্ধ করে দিতে পারলে তো খুবই ভাল। 

এমন অনেকেই আছেন, যারা ডায়াবিটিসে ভুগছেন বলে রান্নায় চিনি খাওয়ার পরিবর্তে গুড়ের খাচ্ছেন । ডায়াবিটিস রোগীর খাবারে গুড় ব্যবহার করা কি আদৌ ভাল?

গুড় প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এক ধরনের মিষ্টি। গুড়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদান, যেমন পটাশিয়াম, আয়রন এবং ক্যালশিয়াম থাকে। তবে তার মানে এই নয় যে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য গুড় খাওয়া স্বাস্থ্যকর।

যদিও গুড়ে আয়রন থাকায় এটি উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, তার পরও ডায়াবেটিক রোগীদের এটি এড়িয়ে চলা শ্রেয়। ১০০ গ্রাম গুড়ে ৩৮৩ ক্যালরি, ৬৫ থেকে ৮৫ শতাংশ সুক্রোজ থাকে এবং ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ থাকে, যা ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গুড় খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। অনেকে মনে করেন, চিনির পরিবর্তে গুড় খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এটা ঠিক নয়। বরং গুড়ে থাকা সুক্রোজ সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এ কারণে এটি চিনির মতোই ক্ষতিকর ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য।

ডায়াবেটিক রোগীদের ডায়েটে এমন খাদ্য রাখা উচিত যার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) কম থাকে। গুড়ের জিআই মাত্রা খুব বেশি থাকে। গুড় খেলে ব্লাড সুগারের মাত্রা তাৎক্ষণিক ভাবে খুব বেড়ে যায়। ডায়াবেটিক রোগীর রোজের ডায়েটে গুড় থাকলে কিডনির সমস্যা, হার্টের সমস্যা, এমনকি শরীরের অন্যান্য অঙ্গও বিকল হয়ে যেতে পারে।

তবে পুষ্টিবিদদের মতে, যাদের শরীরে ডায়াবিটিস রোগ বাসা বাঁধেনি, তারা রোজের ডায়েটে চিনির পরিবর্তে গুড় রাখতেই পারেন। চিনির তুলনায় গুড় অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। তবে ব্যবহার করার আগে গুড়টা আদৌ খাঁটি কি না, তা যাচাই করে নিতে হবে।

বেশির ভাগ ডায়াবেটিক রোগী ভোগেন টাইপ ২ ডায়াবিটিসে। এক রোগের হাত ধরে শরীরে বাসা বাঁধে একাধিক জটিল রোগ। কায়িক পরিশ্রম কম করা, অনিয়মিত খাওয়াদাওয়া, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে কম বয়সেই শরীরে বাসা বাঁধছে ডায়াবিটিসের মতো অসুস্থতা।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, জীবনযাত্রায় সামান্য পরিবর্তন আনলেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে ডায়াবিটিস। বিশেষ করে খাওয়াদাওয়ায় বাড়তি নজর দেওয়া প্রয়োজন।


আমারসংবাদ/টি এইচ