সিঙ্গাপুরে পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ৩, ২০২৫, ০১:০৭ পিএম

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ সিঙ্গাপুরে ৯৭ আসনবিশিষ্ট পার্লামেন্টের ৯২টি আসনের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে নিউ ইর্য়ক ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স। 

স্থানীয় সময় শনিবার (৩ মে) সকাল ৮টা থেকে ১ হাজার ২৪০টি ভোটকেন্দ্রে একযোগে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। চলবে স্থানীয় সময় রাত ৮টা পর্যন্ত এবং ভোটের ফলাফল প্রকাশ করা হবে আগামীকাল রোববার। ৭৩৫ দশমিক ৭ বর্গকিলোমিটার আয়তন এবং ৬০ লাখ ৪০ হাজার জনসংখ্যার দেশটিতে ভোটারের সংখ্যা ২৭ লাখ ৫০ হাজার। অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই ভোটার।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিঙ্গাপুরে এবারের নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে জীবনযাত্রার ব্যয়, আবাসন, চাকরি, স্বাস্থ্যসেবা ও বয়স্ক লোকজনের নিরাপত্তার মতো ইস্যুগুলো মুখ্য ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন দেশটির রাজনীতি বিশ্লেষকরা। 

এবারের নির্বাচন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের অধ্যাপক ও রাজনীতি বিশ্লেষক ল্যাম পেং ইর রয়টার্সকে বলেন, গতবারের নির্বাচনে প্যাপ ৬০ শতাংশ আসনে জয় পেয়েছিল। এবার সম্ভবত তা ৫৭ কিংবা ৫৮ শতাংশে নেমে আসবে। কিন্তু ফলাফল যেমনই হোক, প্যাপকে পরাজিত করা প্রায় অসম্ভব। কারণ সিঙ্গাপুরের রাজনীতিতে এখনও দলটির জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা অবিশ্বাস্য। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সিঙ্গাপুরের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল পিপল’স অ্যাকশন পার্টি (প্যাপ) ১৯৫৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে। এবারের নির্বাচনেও প্যাপের জয়ের সম্ভাবনাও প্রায় শতভাগ। তবে প্রশ্ন হলো বিরোধীদের সঙ্গে জয়ের ব্যবধান কত হবে?

যদিও ১৯৫৯ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে যত নির্বাচন হয়েছে, প্রতিটিতে ভূমিধস বিজয় পেয়েছে পিপল’স অ্যাকশন পার্টি; পার্লামেন্টের ৯০ শতাংশ আসনে জয় পেয়েছেন প্যাপের প্রার্থীরা। তবে ২০২০ সালে এই চিত্র খানিকটা উল্টে যায়। বরাবরের মতো সেই নির্বাচনেও জয় পেয়েছিল পিপল’স অ্যাকশন পার্টি, তবে সেবার পার্লামেন্টের ৬০ শতাংশ আসনে জয় পেয়েছিলেন দলটির প্রার্থীরা। বাকি ৪০ শতাংশ বা ১০টি আসনে জয় পায় বিরোধী দল ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থীরা। এতে অবশ্য সিঙ্গাপুরের রাজনীতিতে দলটির প্রভাব সেভাবে ক্ষুণ্ন হয়নি। চলতি নির্বাচনেও যতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাদের মধ্যে ৪৬ শতাংশই প্যাপের প্রতিনিধি। 

প্রসঙ্গত, ১৯৬৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত গত ৬০ বছরে মাত্র ৪ জন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছে নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুর। ক্ষমতাসীন দল প্যাপের নেতাদের মধ্যে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড সাবেক প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং এর পিতা লি কুয়ান ইউ-এর। টানা ২৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। তার ছেলে লি সেইন লুং প্রায় ২০ বছর দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকার পর ২০২৪ সালের মে মাসে পদত্যাগ করেন। তারপর থেকে এত দিন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকার পরিচালনা করছিলেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লরেন্স উওং। তাই এবারের নির্বাচন লরেন্স উওংয়ের জনপ্রিয়তা যাচাইয়েরও একটি পরীক্ষা। 

বিআরইউ