পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করল ভারত, নিয়ন্ত্রণরেখায় ভয়াবহ সংঘর্ষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৫, ১১:১৮ এএম

ভারতের রাজস্থান সীমান্ত থেকে একজন পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটকের পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। ভারতের দাবি, রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে আটক করা হয় ওই রেঞ্জারকে। তার পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) শনিবার এ ঘটনা ঘটায়। এরপর কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর দুই দেশের সেনাদের মধ্যে তীব্র গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সংঘর্ষ সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড়।

কাশ্মিরের কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধর, নৌশেরা, সুন্দরবানি ও আখনুর সেক্টরে একযোগে গুলিবিনিময় হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একাধিক সূত্রের বরাতে বলা হয়, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে একযোগে কয়েক ডজন চৌকি থেকে গোলা ছোড়া হয়। ভারতও পাল্টা জবাব দিয়েছে।

তবে এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। ভারতের অভিযোগ, বিনা উসকানিতেই পাকিস্তান সেনারা গুলি ছুড়েছে।

এই পরিস্থিতির সূত্রপাত ২৩ এপ্রিল, যখন পাকিস্তান পাঞ্জাব সীমান্ত থেকে বিএসএফ কনস্টেবল পূর্ণম কুমার সাহুকে আটক করে। তিনি ফিরোজপুর সেক্টরে কৃষকদের পাহারার দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ভারত রাজস্থান সীমান্ত থেকে পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করে।

অন্য সময় এমন ঘটনায় দুই দেশ সৈন্য বিনিময় করে থাকলেও এবার উত্তেজনা থাকায় কেউ কাউকে ফেরত দিচ্ছে না।

এদিকে কয়েকদিন আগেই জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এটি সবচেয়ে বড় হামলা।

এই হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই পাকিস্তান শনিবার ‘আবদালি’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। পাকিস্তান জানিয়েছে, এটি ছিল ‘সিন্ধু মহড়া’র অংশ। তবে ভারত একে ‘খোলামেলা উসকানি’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। ভারত স্থগিত করেছে বহু পুরোনো সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও সিমলা চুক্তি স্থগিতের পাশাপাশি ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।

দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

বিআরইউ