ভারি বৃষ্টি ও বন্যায় বিপর্যস্ত উত্তর-পূর্ব ভারত, নিহত অন্তত ৩০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক    প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৫, ০২:৫৪ পিএম

প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ অংশ। আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরামের মতো রাজ্যগুলোতে গত দু’দিনে বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসের কারণে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩০ জনের।

মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোববার (১ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে ভারী বর্ষণ, ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার জেরে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত দুই দিনে এসব কারণে কমপক্ষে ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। শুধু শনিবার ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মণিপুর ও মিজোরাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আসামে ১২টি জেলায় অন্তত ৬০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আসাম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।

আসামের কামরূপ মেট্রোপলিটন জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ভূমিধসে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে গোয়াহাটির উপকণ্ঠে বন্ডা এলাকায় ভূমিধসে ৩ নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রাজ্যের নগর উন্নয়নমন্ত্রী জয়ন্ত মল্ল বড়ুয়া।

অন্যদিকে, অরুণাচল প্রদেশে ভূমিধস ও হঠাৎ বন্যায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে ইস্ট কামেং জেলায়, যেখানে দুই পরিবারের সাত সদস্য একসঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন। প্রবল ভূমিধসের সময় তাদের গাড়িটি রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে এবং পানির তোড়ে ভেসে যায়।

এমন অবস্থায় আবহাওয়া দপ্তর আসামের কিছু অংশে রেড ও অরেঞ্জ এলার্ট এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে অরেঞ্জ ও ইয়েলো এলার্ট জারি করেছে। এতে আরও ভূমিধস ও বন্যার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এদিকে আসামের গৌহাটিতে ৬৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে গত শুক্রবার। সেদিন সেখানে ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এতে শহরের একাধিক এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। ব্রহ্মপুত্রসহ বেশ কিছু নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।

এছাড়া শনিবার রাতে সিকিমেও মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে। দুর্যোগের কারণে উত্তর সিকিমে পর্যটকদের যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। বিপজ্জনক ভাবে বেড়ে গেছে তিস্তার পানি। লাচুং এবং লাচেনের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।

সিকিমে দেড় হাজার পর্যটক আটকে পড়েছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।

আরএস