গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে গুলিতে ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৫, ১১:০৫ এএম

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফায় ত্রাণ সংগ্রহে আসা অসহায় ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

রোববার সকালে সংঘটিত এই হামলায় অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন দুই শতাধিক।

স্থানীয় প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, বিতর্কিত মানবিক সংস্থা ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলো এখন পরিণত হয়েছে ‘মৃত্যুফাঁদে’। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত এই সংস্থার ভূমিকা নিয়ে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বিশ্বজুড়ে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানায়, রাফার ঘটনায় ইসরায়েলি ট্যাংক থেকে সরাসরি গুলি চালানো হয়েছে ত্রাণ নিতে আসা হাজারো মানুষের ওপর। একই দিন নেটসারিম করিডোরের দক্ষিণে আরও একটি বিতরণ কেন্দ্রে গুলিতে একজন নিহত হন।

চোখের সামনে হামলার ঘটনা প্রত্যক্ষ করা রাফার বাসিন্দা ইব্রাহিম আবু সাউদ বলেন, “প্রায় ৩০০ মিটার দূরে থাকা জনতার দিকে গুলি ছোড়া হয়। আমি একজন যুবককে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে যেতে দেখি। আমরা তাকে আর বাঁচাতে পারিনি।”

জিএইচএফের বিতর্কিত ভূমিকা 

জিএইচএফ কার্যক্রম শুরুর আগেই সংস্থার নির্বাহী পরিচালক, সাবেক মার্কিন সেনা জ্যাক উডস পদত্যাগ করেন। তার ভাষায়, “এই পরিকল্পনা মানবতা, নিরপেক্ষতা, পক্ষপাতহীনতা এবং স্বাধীনতার নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা জিএইচএফের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, সংস্থাটি নিরপেক্ষ নয় বরং ইসরায়েলের রাজনৈতিক ও সামরিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার।

“ত্রাণ নয়, এটি মৃত্যুফাঁদ” জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, “মানুষ এখন তাদের সন্তানদের একবেলার খাবার জোগাড় করতে গিয়েই প্রাণ হারাচ্ছে। এটি কোনোভাবেই মানবিক সহায়তা হতে পারে না।”

আল জাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খোদারি বলেন, “ত্রাণ নিতে যাওয়া ফিলিস্তিনিরা জানেন এই বিতরণকেন্দ্রগুলো বিতর্কিত। কিন্তু তাদের সামনে বিকল্প নেই। পরিবারপ্রতি দেওয়া হচ্ছে এক কেজি আটা, দুই প্যাকেট পাস্তা ও কয়েকটি ফাভা বিনের টিন—যা একদিকে অপুষ্টিকর, অন্যদিকে অপমানজনক।”

ইসরায়েলি বাহিনীর অস্বীকার

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা কোনো বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে গুলি চালায়নি। বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে সেনারা কোনো বেসামরিককে লক্ষ্য করেনি। সাম্প্রতিক কিছু তথ্য ভুল ও বিভ্রান্তিকর।”

ইএইচ