সার্কের বিকল্প জোট গঠনে চীন-পাকিস্তানের উদ্যোগে যুক্ত বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২৫, ০১:২২ পিএম

নতুন একটি আঞ্চলিক জোট গঠনের পরিকল্পনায় একসঙ্গে কাজ করছে চীন ও পাকিস্তান। সম্ভাব্য এই জোটটি দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক)-এর বিকল্প হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ উদ্যোগে বাংলাদেশও যুক্ত রয়েছে।

সোমবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সংযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় সংহতি গড়তে চীন ও পাকিস্তান বেশ কিছু মাস ধরে নতুন একটি জোট গঠনের আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এই আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলেও জানিয়েছে একাধিক কূটনৈতিক সূত্র।

এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই সম্প্রতি চীনের কুনমিং শহরে পাকিস্তান, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ১৯ জুন অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে তিন দেশের শীর্ষ কূটনীতিকরা অংশ নেন। এটিই ছিল এই তিন দেশের মধ্যে প্রথম উচ্চপর্যায়ের বৈঠক।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোকেও এই প্রস্তাবিত জোটে অন্তর্ভুক্ত করা এবং সার্কের কার্যকারিতা না থাকার প্রেক্ষাপটে একটি নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো দাঁড় করানো।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, ভারতকেও এই নতুন জোটে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে, তবে দিল্লি এতে সাড়া দেবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে, কারণ ভারতের আঞ্চলিক কূটনীতি ও স্বার্থ অনেকটাই ভিন্ন।

অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, আফগানিস্তানসহ সার্কভুক্ত অন্যান্য দেশগুলো নতুন এই গোষ্ঠীর অংশ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রস্তাবিত এই জোটের মূল লক্ষ্য হবে আঞ্চলিক বাণিজ্য, অবকাঠামোগত সংযোগ এবং অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি। পাশাপাশি মতাদর্শগতভাবে মিল আছে এমন দেশগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলাও হবে এই সংস্থার অন্যতম উদ্দেশ্য।

সার্ক এক সময় দক্ষিণ এশিয়ার ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন’ হিসেবে বিবেচিত হলেও, ভারত-পাকিস্তান বৈরিতা এবং রাজনৈতিক জটিলতায় এটি কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে। সর্বশেষ সার্ক সম্মেলন হয় এক দশক আগে। ২০১৬ সালে ইসলামাবাদে সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও ভারত তা বয়কট করে এবং তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারও অংশ নেয়নি। এরপর থেকে সার্ককে পুনর্জাগরিত করার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সম্প্রতি পেহেলগাম হামলার পর ভারত পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের জন্য সার্কের বিশেষ ভিসা সুবিধাও বাতিল করে দেয়, যা সার্কের ভবিষ্যৎকে আরও অনিশ্চিত করে তোলে।

এই প্রেক্ষাপটে, চীন ও পাকিস্তান আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সহযোগিতার জন্য ‘মনোভাব ও স্বার্থে মিল রয়েছে’ এমন দেশগুলোর সঙ্গে একটি নতুন জোট গঠনের সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে।

ইএইচ