যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে টানা বৃষ্টিপাতের পর সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৮ জন। এ ঘটনায় এখনো ৪১ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। শুক্রবার (৪ জুলাই) থেকে শুরু হওয়া এই দুর্যোগ পরিস্থিতি টেক্সাসের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কের কাউন্টি। এখানেই মারা গেছেন ৬৮ জন, যাদের মধ্যে ২৮ জন শিশু। কাউন্টির একটি নদীতীরে অবস্থিত খ্রিস্টান মেয়েদের একটি গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প ছিল এই শিশুদের অবস্থানস্থল। ওই ক্যাম্পের অন্তত ১০ জন কিশোরী এবং তাদের একজন কাউন্সেলর এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
উদ্ধারকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় বহু মানুষ পানির তোড়ে ভেসে গেছেন। নদীর তীরবর্তী এলাকার আশপাশে এখনও অনেক ধ্বংসাবশেষ ও কাদা জমে রয়েছে, যা উদ্ধার তৎপরতাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। অনেক জায়গায় উদ্ধারকারীরা বিষধর সাপ ও অন্যান্য বিপজ্জনক প্রাণীর মুখোমুখিও হচ্ছেন।
বন্যায় বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। কের কাউন্টিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও ১০ জন শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে তাদের কারো পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।
টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, যতক্ষণ না প্রত্যেক নিখোঁজ মানুষকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত উদ্ধার কার্যক্রম থামবে না।
তিনি আরও বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিকে ‘মারাত্মক দুর্যোগ’ আখ্যা দিয়ে কের কাউন্টির জন্য জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা স্বাক্ষর করেছেন। ফলে ফেডারেল এমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (এফইএমএ) জরুরি সহায়তা নিয়ে টেক্সাসে কাজ শুরু করেছে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি রাজ্যটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন এবং পরিস্থিতির ভয়াবহতা নিজের চোখে দেখতে শুক্রবার টেক্সাস সফরে যেতে পারেন।
তিনি বলেন, যেটা ঘটেছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। টেক্সাসবাসী ভয়াবহ এক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এবং আমরা তাদের পাশে আছি। সূত্র: বিবিসি
বিআরইউ