৫ বছর পর মামলা খারিজ

তাবলিগ জামাত করোনার জন্য দায়ী নয়: দিল্লি হাইকোর্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৫, ১১:৪০ এএম

দিল্লির নিজামুদ্দিনে ২০২০ সালে তাবলিগ জামাতকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর জন্য দায়ী করা হয়েছিল— সেই অভিযোগ নাকচ করে দিল দিল্লি হাইকোর্ট। মামলাটি খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণা বলেছেন, পুলিশের পক্ষে কোনো অভিযোগই প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি।

বিচারপতি তাঁর রায়ে বলেন, ‘‘ওটা ছিল এক অসহনীয় পরিস্থিতি। অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই বাধ্য হয়ে গৃহবন্দী ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের অভিযোগ ধোপে টেকে না।’’

এই মামলায় দিল্লি পুলিশ ভারতীয় ৭০ জন নাগরিকের বিরুদ্ধে দায়ের করেছিল ১৬টি এফআইআর। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছিল অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ও সরকারি আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগ। পুলিশের চার্জশিটে ১৯৫ জন বিদেশির নামও ছিল, যাঁরা জামাতে অংশ নিতে ভারতে এসেছিলেন।

২০২০ সালের মার্চে আচমকা লকডাউনের ঘোষণা আসার আগে ৯ ও ১০ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিনে তাবলিগ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৯ হাজার মুসল্লি অংশ নেন এতে। ১৩ মার্চ দিল্লি পুলিশ ভিড় ঠেকাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে, আর ২৫ মার্চ কেন্দ্রীয় সরকার হঠাৎ করেই দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করে।

সেই সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপির কয়েকজন নেতা প্রকাশ্যে তাবলিগ জামাতকে করোনার উৎস হিসেবে দায়ী করেন। এরপরই পুলিশ জামাতে অংশ নেওয়াদের বিরুদ্ধে মামলা করে, যা ঘিরে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সামাজিক বয়কট ও বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে।

হাইকোর্ট প্রশ্ন তোলে, ‘বিদেশি নাগরিকসহ তাবলিগে আসা মানুষজন হঠাৎ লকডাউনে কোথায় যেতে পারতেন? তাঁদের অপরাধ করার কোনো প্রমাণ কী পাওয়া গেছে?’ বিচারপতি স্পষ্ট করে জানান, অভিযুক্তরা মহামারি আইন কিংবা বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের কোনো ধারা লঙ্ঘন করেন নি।

পাঁচ বছর পর হাইকোর্টের এই রায়ে আইনি দায়মুক্তি পেলেন তাবলিগ জামাতে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় ও বিদেশি মুসল্লিরা। এই রায় শুধু একটি মামলার নিষ্পত্তিই নয়, বরং রাষ্ট্রীয় অভিযোগের বিপরীতে একটি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দৃষ্টান্ত হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

বিআরইউ