বেলুচিস্তানে ইন্টারনেট বন্ধ করল পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ০৭:৩৬ পিএম

বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সন্ত্রাসবাদে জর্জরিত পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।

সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্তত তিন সপ্তাহ এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এরপর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান ভৌগোলিক আয়তনে দেশের সবচেয়ে বড় প্রদেশ হলেও এটি সবচেয়ে জনবিরল, অবহেলিত এবং দারিদ্র্যপীড়িত এলাকা হিসেবেই পরিচিত। যেখানে গোটা পাকিস্তানের জনসংখ্যা প্রায় ২৪ কোটি, সেখানে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ১৯০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বেলুচিস্তানে বাস করেন মাত্র দেড় কোটি মানুষ।

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই বেলুচিস্তানে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন চলছে, যাকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদ’ হিসেবে চিহ্নিত করে আসছে কেন্দ্রীয় সরকার ও সেনাবাহিনী। এই প্রদেশে প্রায়ই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ ঘটে।

প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ বেলুচিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকার ও চীন যৌথভাবে খনিজ উত্তোলন কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তবে বেলুচ স্বাধীনতাকামীদের অভিযোগ— তাদের সম্পদ লুট করা হচ্ছে, অথচ স্থানীয় উন্নয়নে কোনো ভূমিকা নেই ইসলামাবাদ ও বেইজিংয়ের।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা খনিজসম্পদ বিক্রি থেকে আয় হওয়া মুনাফায় নিজেদের অংশ দাবি করেছিল। দাবি না মানায় সম্প্রতি তারা রাজ্যের বিভিন্ন সেনা ও প্রশাসনিক স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে।

বেলুচিস্তান প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শহীদ রিন্দ রয়টার্সকে বলেন, “মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কারণ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এটি সমন্বয় ও তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।”

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের এক কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স আরও জানায়, গত মঙ্গলবার বেলুচিস্তানে বোমা হামলায় একজন সেনা কর্মকর্তা ও দুজন সেনাসদস্য নিহত হন। প্রাথমিক তদন্তে হামলার পেছনে বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-এর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

এই ঘটনার পরই মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিষেবা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার।

সূত্র: রয়টার্স

ইএইচ