ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আর নেই

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। 

রোববার (৪ মে) বিকেলে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দীর্ঘ দিন দায়িত্বপালন করেছেন।

আব্দুর রাজ্জাক ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির জানান, আব্দুর রাজ্জাক ধানমন্ডিতে ইবনে সিনা হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। সেখানে আজ বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে তিনি মারা যান।

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। তার সুস্থতা কামনা করে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় তারা বলেন, ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বাংলাদেশের আইন জগতের এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তিনি দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে যেসব বিচারিক হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে সেটার বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সব সময় সোচ্চার। ফ্যাসিবাদের রোষানলে পরে দীর্ঘ একযুগ তাকে প্রবাস জীবন কাটাতে হয়েছে। সেই সময়ই তিনি দুরারোগ্য ক্যানসারে আক্রান্ত হন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগ হিসেবে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি) প্রতিষ্ঠায় ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের অবদান অবিস্মরণীয়। তারা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের আশু সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং দেশবাসীর কাছে দোয়ার আবেদন জানান।

ব্যারিস্টার রাজ্জাক এক সময় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর তিনি যুক্তরাজ্যে চলে যান। এর আগে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতাদের পক্ষে আইনি লড়াই করেন।

যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াত থেকে পদত্যাগ করেন। পরে ব্যারিস্টার রাজ্জাক আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রধান উপদেষ্টা হন। তবে ক্ষমতার পালাবদলের পর ২০২৫ সালের ১৭ আগস্ট সেই পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি।

গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। দেশে ফিরে আবারও সক্রিয়ভাবে আইন পেশায় যুক্ত হন।

তার আশু সুস্থতা কামনা করেছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানও।

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে জন্মগ্রহণকারী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ১৯৮০ সালে যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টারি ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখানেই তিনি ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। দেশে ফিরে ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। এরপর ১৯৯৪ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী এবং ২০০২ সালে সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। ১৯৯০ সালে তিনি ‘দ্য ল’ কাউন্সেল’ নামে একটি আইনি প্রতিষ্ঠানও গঠন করেন।

বিআরইউ