জুলাই মাসের গণহত্যায় জড়িত কেউই ছাড় পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
সোমবার দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “যারা মনে করেছিলেন বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়ে পার পাওয়া যাবে কিংবা প্রতিবিপ্লব ঘটিয়ে বিচারকাজ বানচাল করা যাবে, তাদের জন্য স্পষ্ট বার্তা হলো—যারা অপরাধ করেছেন, তারা কেউই ছাড় পাবেন না। বিচারের প্রক্রিয়া কোনোভাবেই বন্ধ হবে না।”
এদিন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে শিক্ষার্থী আনাসসহ ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন তাজুল ইসলাম। বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “যেসব তরুণ রক্ত দিয়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার মুক্ত করেছেন, তাদের স্বজনরা বেঁচে আছেন। তাদের সাক্ষ্যের মাধ্যমেই দেড় হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানির ন্যায়বিচার রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হবে।”
চানখারপুলে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে শহীদ আনাসের বাবা শাহরিয়ার খান পলাশ সাক্ষ্য দেন। এ সময় আনাসের মা-ও উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, গত ১৪ জুলাই এ মামলায় পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। বর্তমানে কারাগারে থাকা চার আসামি হলেন—শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।
গত ৩ জুলাই মামলার অভিযোগ গঠন নিয়ে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষে আসামিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন আইনজীবী সিফাত মাহমুদ শুভ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম।
এছাড়া, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও ট্রাইব্যুনালে হাজির হননি সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম এবং সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।
গত ২৯ জুন রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ করে। তবে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন শুনানির জন্য সময় চান আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। এর আগে গত ৩ জুন পলাতক চার পুলিশ কর্মকর্তাকে হাজির করতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ২৫ মে এ মামলায় আট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল এবং পলাতক চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ গুলি চালায়। এতে বহু হতাহত হয়। শহীদ হন শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদী হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক।
ইএইচ