বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পঞ্চম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ।
সোমবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে ষষ্ঠ সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।
আজকের শুনানিতে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি শুরুতে এ মামলার অন্যতম আসামি থাকলেও পরে রাষ্ট্রপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতার শর্তে রাজসাক্ষী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তাকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি নিজের জবানবন্দি দেওয়ার প্রস্তুতির কথা জানান। আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামুনের সাক্ষ্য মামলার অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে প্রসিকিউশন।
এর আগে রোববার এ মামলায় চারজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন। তাদের প্রত্যেকেই জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও সহিংস কর্মকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী বা ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ছিলেন। এ পর্যন্ত মোট ৮১ জন সাক্ষীর তালিকা থেকে ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। প্রসিকিউশন বলছে, নিয়মিত কার্যক্রম চললে আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যেই শেখ হাসিনাসহ তিনজন আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে এ মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে টানা তিন সপ্তাহের আন্দোলনকালে সারা দেশে সংঘটিত সহিংসতায় অন্তত এক হাজার ৪০০ ছাত্র-জনতা নিহত হন। এই হত্যাযজ্ঞে উসকানি, নির্দেশনা ও প্ররোচনার মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে।
রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, উচ্চপর্যায়ের পরিকল্পনা ও নির্দেশনা ছাড়া এ ধরনের ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ সম্ভব নয়। অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।
আজকের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলার পরবর্তী কার্যক্রমের তারিখ নির্ধারণ করবে ট্রাইব্যুনাল। মামলার অগ্রগতি ঘিরে দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জেএইচআর