খালেদা জিয়া মুক্ত, তিনি তার বাসায় আছেন: আইনমন্ত্রী

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২২, ০৩:৪১ পিএম

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘গতকালও শুনেছি বিএনপির নেতারা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তিনি মুক্ত, তিনি তার বাসায় আছেন। প্রায় সময় তিনি চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যান। তাকে মুক্তি দেওয়ার কী আছে। তারা আরও বলছেন, ডিসেম্বরের ১০ তারিখ খালেদাকে দিয়ে সমাবেশে বক্তব্য দেওয়াবেন। যে দুই শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, সেখানে তিনি যে রাজনীতি করতে পারবেন না, এ শর্ত নেই। কিন্তু তাদের যে আবেদন ছিল সেখানে পরিষ্কার লেখা ছিল তার শারীরিক অবস্থা এতোটাই খারাপ যে তিনি চলাফেরা করতে পারেন না। তাড়াতাড়ি মুক্তি দিয়ে তাকে চিকিৎসা দিতে হবে। খালেদা যদি সমাবেশে যান তাহলে কী তার অসুস্থতার বিষয়টা মিথ্যা প্রমাণিত হবে না?

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জে জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্মিত সেলিম ওসমান বার ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আপনারা সবাই কোর্ট অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউরের নাম শুনেছেন। আইনের ৪০১ ধারার নামও শুনেছেন। আপনাদের একটা কথা বলি,  ২০০৭ থেকে ২০০৮ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল তখন খালেদার নামে দুটোর অধিক দুর্নীতির মামলা করা হয়। তদন্ত হয়, চার্জশিটও হয়। প্রতিটা মামলার সময় খালেদার আইনজীবীরা আদালতের শরণাপন্ন হন। শুধু নিম্ন আদালত না, তারা ‘অ্যাপিলেট ডিভিশন’ পর্যন্ত গেছেন।

এ মামলাটা শেষ করতে। ‘অ্যাপিলেট ডিভিশন’ বলেছে মামলা শেষ করা যাবে না। বিচারিক আদালতে বিচার হবে। মামলাটির বিচারিক আদালতে বিচার হয়েছে, সাজাও হয়েছে। তারা আপিল করেছেন একটি মামলায়, সেটায় হাইকোর্টের রায়ে সাজা বাড়ানো হয়েছে। আরেকর বিচারিক আদালতে সাজাও হয়েছে। তারপর তিনি জেলে গেছেন। জেলে থাকাকালীন অবস্থায় তার পরিবারের সদস্যরা দরখাস্ত করেছেন খালেদার শরীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। যেকোনো আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে জেল থেকে মুক্ত করতে তারা প্রার্থনা করেছেন।

এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মহানুভবতায় ৪০১ ধারায় দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে তাকে মুক্তি দিয়েছেন। আমি এখনও শুনি বিএনপি বলে, তাকে জামিন দিতে হবে। আমাকে একটু শেখান মুক্ত মানুষকে কীভাবে বেল (জামিন) দেয়। মনে রাখতে হবে অ্যাপিলেড ডিভিশন তাকে বেল দেয়নি। তাকে মুক্ত করা হয়েছে। ‘যারা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তারা আজও সোচ্চার। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যারা স্বাধীনতাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। তারা আবারও জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের যে উন্নয়ন হয়েছে, সেটা নষ্ট করে দেশকে আবার কোনো অপশক্তির কলোনিয়াল স্টেট বানানোর চেষ্টা করছে। একটা হলো আমাদের স্বাধীনতা আরেকটা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা। এ দুটো জিনিস কোনো আলোচনায় আসবে না। এটা হতে হবে, জননেত্রী শেখ হাসিনা করেই ছাড়বেন ‘

আইনমন্ত্রী আনিসুল আরও বলেন, আমরা এ দেশে স্বাধীন পেশা করার ক্ষমতা রেখেছি আমাদের কোর্টে। আমি বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি পাশাপাশি ৩০ লাখ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আজ আমরা এ স্বাধীনতা পেয়েছি বলেই উচ্চ স্বরে আইনের জন্য লড়াই করে যেতে পারছি।

তিনি বলেন, ৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরে ২৬ সেপ্টেম্বর সেই কালো দিন যেদিন ইনডেমনিটি দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয় বঙ্গবন্ধু হত্যার কোনো বিচার হতে পারবে না। আমরা সেটাও দেখেছি। ২১ বছর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার পাইনি। ১৯৯৬ সালের ২ আগস্ট সে মামলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা ক্ষমতায় আসার পর। বর্তমানে মামলা করতে পাঁচ মিনিট দেরি করতে হয় না। তখনও এ অধিকার ছিল শুধু বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ছিল না। এ আদালত ও বার ভবন আপনাদের রক্ষা করতে হবে। আপনারা আইনের শাসনের প্রতি আপনাদের শ্রদ্ধা ও ত্যাগ অব্যাহত রাখবেন।

মন্ত্রী বলেন, একটা প্রশ্ন সবাই করে, নারায়ণগঞ্জে দাওয়াত করলে আপনি চলে যান কেন। আমার প্রশ্ন নারায়ণগঞ্জে এমন দানবীর থাকতে আমি এমন একটা ভবন উদ্বোধন করতে না এসে পারি না। ২০১৬-১৭ সাল থেকেই নারায়ণগঞ্জের বারের যেকোন অনুষ্ঠান হলে আমি আসি। নারায়ণগঞ্জের মানুষের প্রতি আমার অন্য একটা টান আছে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতি আমার একটা টান আছে। আমি আপনাদের কথা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলবো। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা। আপনারা একটা বিদ্যুৎ আদালত চেয়েছেন, সেটা পাবেন। আমি যেমন আগেও আপনাদের সহযোগিতা করে এসেছি, তেমনভাবে সবসময় পাশে থাকবো।

এবি