‘রেদোয়ান আহমেদের রায়, নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী শূন্যতা সৃষ্টির অপচেষ্টা’

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৩, ০৬:২৬ পিএম

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) মহাসচিব ও সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রেদোয়ান আহমেদের তিন বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন।

এই রায়ের প্রতিবাদে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ (বীর বিক্রম) বলেছেন, এই রায়ের ফলে বিচার বিভাগ প্রমাণ করেছে তারা স্বাধীন না। বর্তমান সরকার আদালতকে তার কাজ সঠিকভাবে করতে দিচ্ছে না। তাদের প্রভাবিত করা হচ্ছে।

এক বিবৃতিতে কর্নেল অলি বলেন, ১। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে ২০০৪ সন পর্যন্ত ইহা সরকারের কোন প্রতিষ্ঠান এর নামে নিবন্ধিতও ছিল না। সুতরাং এডভোকেট রেদোয়ান আহমেদ একটি সম্পূর্ণ বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসাবে ইহার কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল কর্তৃক নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। এইক্ষেত্রে দন্ডবিধির ৪০৯ ধারা বা দুদক আইনের ৫(২) ধারা অভিযোগ আনা প্রযোজ্য নহে।

২। সরকারীভাবে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি। সরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ছাড়া কাহারো বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪০৯ ধারা ও দুর্নীতিদমন প্রতিরোধ আইন এর ৫(২) কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা আইন সম্মত নয়।

৩। অভিযোগকারীর অভিযোগ অনুযায়ীও রেদোয়ান আহমেদ সর্ম্পূন নির্দোষ। তাছাড়া অভিযোগকারী জনৈক নুরুল ইসলাম তাহার সাক্ষ্য প্রদান কালে রেদোয়ান আহমেদ এর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযাগ আনায়ন করেননি।  

১/১১ এর সময় তাহাকে তৎকালীন ক্ষমতাসীনরা বন্ধুকের নলের মাথায় সাদা কাগজে সই নিয়ে এ সমস্ত অভিযোগ তৈরী করেছেন মর্মে তিনি সাক্ষ্য দেন।

৪। প্রসিকিউশন সাক্ষীগন কেহই রেদোয়ান আহমেদ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কোন অর্থ আত্মসাৎ করেছেন মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করেন নাই। তাছাড়া ড. রেদোয়ান আহমেদ এর সহ-অভিযুক্ত কর্তৃক প্রদত্ত স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দির সাক্ষ্যগত কোন মূল্য নাই। অপরদিকে, ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারা অধীনে কোন সাক্ষীর বিবৃতি তিনি নিজে আদালতে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য প্রদান না করায় উহাও গ্রহণযোগ্যতা হারায় এবং অনুরূপ সাক্ষী মৃত্যুবরণ করিলেও উহার সাক্ষ্য মূল্য থাকে না।

৫। আই.ও. তাহার মনগড়া চার্জশীট দাখিল করেছেন। আই.ও. ডঃ রেদোয়ান আহমেদ এর পক্ষে মাননীয় আদালতের সম্মুখে জেরায় কোন সঠিক উত্তর দিতে পারে নাই। এমনকি অভিযোগের সময়কালের অর্থাৎ ২০০১-২০০২ অর্থ বছরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অডিট রিপোর্ট পর্যালোচনা করেন নাই, ২০০১-২০০২ অর্থ বছরের হিসাবের খাতও তিনি পর্যালোচনা না করে অনুমান ভিত্তিক চার্জসীট দাখিল করেছেন।  

৬। ডঃ রেদোয়ান আহমেদ তাহার ডিফেন্স উইটনেস এর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল ২০০১-২০০২ অর্থ বছরে  ঋণ হিসাবে মোট ৫৩,৭০,০০০/- (তেপ্পান্ন লক্ষ সত্তুর হাজার) টাকা গ্রহন করেছেন ইহার দালিলিক প্রমাণ তিনি মাননীয় আদালতে সামনে দাখিল করেন। তাহার সকল দলিলাদি তৎকালীন সংসদের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী জাহাঙ্গীর আমীর সাক্ষ্য প্রমানের মাধ্যমে সনাক্ত করেন।

৭। ড. রেদোয়ান আহম্মেদ এর নিকট হইতে গৃহিত ঋণের আংশিক ৪০,০০,০০০/- (চল্লিশ লক্ষ) টাকা তাহাকে পে-অর্ডারের মাধ্যমে তাহার একাউন্টে ফেরৎ দেওয়ার বিষয়টি আদালতের সামনে প্রমাণিত। ২০০১-২০০২ অর্থ বৎসরের সমুদয় আয় ব্যয়ের হিসাব অডিট রিপোর্ট দাখিলের মাধ্যমে মাননীয় আদালতের সামনে দাখিল করা হয়।

৮। রেদোয়ান আহমেদ ২০০৩ সনের মে মাসের শেষের দিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান এর পদ হইতে পদত্যাগ করেন। ঐ সময়ের পর হইতে দীর্ঘ ২৩টি অর্থ বছরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের পক্ষ হইতে ডঃ রেদোয়ান আহমেদ এর নিকট কোন টাকা পাওনা আছে মর্মে কোন দাবী করা হয় নাই। এতেই প্রমাণিত হয় যে, তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানের কোন অর্থ আত্মসাৎ করেন নাই।

৯। ওয়ান-ইলাভেন সময়ের সেনা সমর্থিত সরকারের আমলে প্রায় সকল দলের প্রথম সারির নেতাগণসহ দলীয় প্রধানগণের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা সমূহের অন্দরে আওয়ামী লীগ দলীয় নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা সমূহ প্রত্যাহার হইলেও বিরোধীমত প্রকাশকারীদের কন্ঠরোধ করার অসৎ মানসে সেনা সমর্থিত সরকারের আমলে দায়েরকৃত মামলা সমূহ প্রত্যাহার করা হয়নি বরং আগামী নির্বাচনে বিরোধী দলের প্রার্থী শূন্যতা সৃষ্টির অপচেষ্টায় মিথ্যা মামলা সমূহে ফরমায়শী রায় প্রদান করিয়ে গণতন্ত্র নস্যাৎ ও পরমত স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে, যা কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এইচআর