আমরা মুসলিম এবং হিন্দু এক বৃন্তে দুটি ফুলের মতো। বিভেদের রাজনীতি আমাদের ঐতিহ্য নষ্ট করেছে অথচ এ দেশে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে এক সময় গভীর বন্ধন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কালীবাড়ি বাজারে অবস্থিত শ্রী শ্রী কালীবাড়ি মন্দির প্রাঙ্গণে শ্রী শ্রী ‘শনিদেব’-এর মন্দির ফলক উন্মোচনের এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সন্ধ্যা শুরু হতো শাঁখ ও ঘণ্টার ধ্বনিতে। আমি নিজেও পূজার প্রসাদ খেয়েছি বহুবার। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে এক সময় আমাকে মন্দির বা সনাতন ধর্মের অনুষ্ঠানে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়েছে, যা আমার জন্য দুঃখজনক।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমাদের পরিবার সবসময় আপনাদের সঙ্গে ছিল, আছে এবং থাকবে। নিজের শরীরের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও আপনাদের রক্ষা করব আমরা।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে অবস্থানকালে অনেকে প্রশ্ন করত- মুসলমান হয়ে আমরা কেন ভারতে এসেছি? তখন হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই বলতেন, আমরা মানুষকে হিন্দু-মুসলমান হিসেবে দেখি না। আমাদের পরিচয়- আমরা বাংলাদেশি।’
সামাজিক বিভাজনের বিরুদ্ধে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কে হিন্দু, কে মুসলমান এসব ভুলে নতুন ধারার বাংলাদেশ গড়তে হলে সবাইকে একত্রিত হতে হবে। রাজনীতি বা ধর্ম কোনোটিই মানুষের মূল পরিচয় নয়।’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘অনেকেই বলেন, আমার মধ্যে রবীন্দ্রনাথের প্রতি একটা আলাদা প্রীতি রয়েছে। আমি তাকে কেবল কবি হিসেবে নয়, একজন দার্শনিক হিসেবেও দেখি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়, তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে এগুলো ব্যবহার করি না।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট বলরাম গুহ ঠাকুরতা, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট সভাপতি শ্রী মনোরঞ্জন সিংহ, শ্রী শ্রী কালীবাড়ি মন্দির কমিটি সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র মল্লিক ও স্থানীয় বিএনপির অন্য নেতারা।
আরএস