চরমোনাই পীর

সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে ছাত্র-জনতার রক্ত বৃথা যাবে

মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, ফেনী প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২৫, ০৭:৫৫ পিএম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার ও গণহত্যার বিচার ছাড়া পূর্বের নিয়মে নির্বাচন হতে পারে না। সংস্কার ছাড়া যদি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তবে জুলাই আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার রক্ত বৃথা যাবে।

তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশ গঠনের জন্য সংস্কারের প্রয়োজন—এ নিয়ে জাতির ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। এখন কোনো অশুভচক্রের চাপে সংস্কারের আগে যদি নির্বাচনের ঘোষণা আসে, তবে আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই—ছাত্র-জনতা এখনও রাজপথ পাহারায় রয়েছে।

বুধবার বিকেলে ফেনী শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

সমাবেশের মূল দাবি ছিল—প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং ফেনীর ফুলগাজী-পরশুরামে টেকসই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ।

চরমোনাই পীর বলেন, “পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশে ফ্যাসিবাদ আর প্রতিষ্ঠিত হবে না, বরং একটি জবাবদিহিমূলক সরকার কায়েম হবে। সুন্দর রাষ্ট্র গঠিত হবে। জবাবদিহিতার অভাবেই ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়।”

তিনি আরও বলেন, বিগত ৫৪ বছরে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়েছে সেটিই ছিল রাষ্ট্র সংস্কারের প্রধান অন্তরায়। বিশ্বের বহু দেশে যেমন সংখ্যানুপাতিক ভোটাভুটি (পিআর) পদ্ধতি চালু রয়েছে, তেমনি বাংলাদেশেও এটি চালু করা জরুরি। এই পদ্ধতিই কালো টাকার দৌরাত্ম্য, মাস্তানি ও চাঁদাবাজি রোধের একমাত্র উপায়।

তিনি বিভিন্ন সংস্থার জরিপ বিশ্লেষণ করে দাবি করেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চায়। তাই আজ এটি জাতীয় দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বন্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ফেনীর মানুষের দুর্ভোগের আরেক নাম বন্যা। প্রতি বছর এখানকার মানুষ বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়। তাই ফেনীর পরশুরামে টেকসই ও বিজ্ঞানভিত্তিক বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা জরুরি।”

সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সভাপতি মাওলানা গাজী এনামুল হক ভূঁইয়া সভাপতিত্ব করেন এবং সেক্রেটারি আলহাজ্ব মাওলানা একরামুল হক ভূঁইয়া সঞ্চালনা করেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা নুরুল করীম আকরাম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমির মুফতি আবদুল হান্নান, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রকৌশলী আতিকুর রহমান মুজাহিদ, হেফাজতে ইসলামের জেলা সেক্রেটারি মাওলানা ওমর ফারুক এবং জেলা যুব আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ জাহিদ হাসান চৌধুরী।

এ সময় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে ফেনী-১ (পরশুরাম-ফুলগাজী-ছাগলনাইয়া) আসনে মাওলানা ফরিদ উদ্দিন আল মোবারক, ফেনী-২ (সদর) আসনে আলহাজ্ব মাওলানা একরামুল হক ভূঁইয়া এবং ফেনী-৩ আসনে আলহাজ্ব সাইফ উদ্দিন শিপনের নাম ঘোষণা করা হয়।

সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ইএইচ