আজ থেকে ঠিক ২০ বছর আগের কথা। হাঙ্গেরির বিপক্ষে ১৭ আগস্ট এক প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টাইন কোচ হোসে পেকারম্যান ১৮ বছর বয়সী এক তরুণকে মাঠে নামালেন। বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের নজর ছিল তার দিকে। কারণ কদিন আগেই অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ জিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন এই তরুণ, হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতা। নাম তার লিওনেল মেসি।
কিন্তু তার জন্য অপেক্ষা করছিল এক হতাশাজনক অভিষেক। মাঠে নামার মাত্র ৪৭ সেকেন্ড পরই লাল কার্ড দেখে তাকে মাঠ ছাড়তে হয়। প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে হাত দিয়ে সরিয়ে দিতে গিয়ে রেফারি তার আচরণকে 'আক্রমণাত্মক' মনে করেন।
মাঠের অন্য খেলোয়াড়দের প্রতিবাদেও কোনো লাভ হয়নি। চোখের জলে মাঠ ছেড়েছিলেন এই তরুণ। সেই দিনটি ছিল মেসির ক্যারিয়ারের অন্যতম এক তিক্ত অভিজ্ঞতা।
তবে সেই হতাশা থেকেই জন্ম নিয়েছিল এক কিংবদন্তির। পরের দুই দশক ধরে মেসি নিজেকে এমন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, যা ফুটবল ইতিহাসে বিরল। তিনি শুধু গোল আর শিরোপা জেতেননি, জয় করেছেন কোটি কোটি মানুষের হৃদয়।
একজন কিংবদন্তির উত্থান
সেই বিতর্কিত অভিষেকের পর মেসি আর পেছনে ফিরে তাকাননি। ৩ সেপ্টেম্বর প্যারাগুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে তিনি আবার জাতীয় দলে ফেরেন। সেই ম্যাচ থেকেই শুরু হয় তার অবিস্মরণীয় যাত্রা।
মেসি এখন আর্জেন্টিনা দলের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা, তার নামের পাশে রয়েছে ১১২ গোল। দেশের অধিনায়ক হিসেবে তিনি জিতেছেন বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা ও ফাইনালিসিমা। একের পর এক রেকর্ড গড়ে তিনি নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়।
২০ বছর পর সেই বিতর্কিত অভিষেক শুধুই একটি গল্প। মেসি প্রমাণ করে দিয়েছেন, একজন কিংবদন্তি হতে হলে শুরুটা নিখুঁত হতে হয় না, বরং শেষটাই আসল। তার ক্যারিয়ার আমাদের শেখায়, জীবনের যেকোনো ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অসাধারণ কিছু অর্জন করা সম্ভব।
জেএইচআর