জাতিসংঘ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

বিশ্ব নেতৃত্বে সাহসী উচ্চারণ

রফিকুল ইসলাম প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২, ০১:৪৩ এএম

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ, বিশ্বব্যাপী অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ, স্যাংশন বন্ধ, মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবার গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য বিশ্ব নেতৃত্বে সাহসী উচ্চারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সাথে বলেন,  নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে নারী, শিশুসহ ও গোটা মানবজাতিকেই শাস্তি দেয়া হয়।

জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে ভবিষ্যৎ সংকট মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির ভয়াবহ প্রভাব কাটিয়ে ওঠার সময়ে ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত শুরু হওয়ায় বিশ্ব নতুন করে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, জ্বালানি ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এ সংকটময় সময়ে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি। এ সংকট নিরসনে জাতিসংঘকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

‘যুদ্ধ বা একতরফা জবরদস্তিমূলক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরীপন্থা কখনো কোনো জাতির মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। পারস্পরিক আলাপ-আলোচনাই সংকট ও বিরোধ নিষ্পত্তির সর্বোত্তম উপায়।’ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে  দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ ভাষণকে স্পষ্টভাষী ও বিশ্বের জন্য ক্লিয়ার ম্যাসেজ বলে মনে করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা।

তারা বলেন, কোভিড-১৯ সংকটকালীন সময়ে বৈশ্বিক সংকট নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের নেতাদের যে কথা বলা প্রয়োজন, তাদেরও যে দায়িত্বশীল হতে হবে— প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তা তুলে ধরেছেন। যারা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের সাথে জড়িত, তাদের সংযত হতে বলেছেন। জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ ভাষণ বৈশ্বিক রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে দাবি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু আমার সংবাদকে বলেন, ‘বিশ্ব পরিস্থিতি অনেক খারাপ। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাব বিশ্বব্যাপী হচ্ছে। অস্ত্র বিক্রির প্রতিযোগিতা দিনদিন বাড়ছেই। এমন অবস্থায় বিশ্বের চলমান সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন তা খুবই সময়োপযোগী।’

তিনি আরও বলেন, ‘সারা বিশ্বে যদি অশান্তি বিরাজ করে এবং যুদ্ধ চলমান থাকে তাহলে বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষ হবে, নানামুখী সংকট সৃষ্টি হবে, মানবিক অধিকার লঙ্ঘন হবে, উন্নয়নশীল দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বিশ্ব অর্থনীতি ধ্বংসের মুখে পড়বে। বিশ্বব্যাপী যেন এমন সংকট তৈরি না হয়— জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুকন্যা বক্তব্য দিয়েছেন। তা সারা বিশ্বের মানুষের কল্যাণে কাজ করবে।’

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ স্পষ্টভাষী ও ক্লিয়ার ম্যাসেজ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান আমার সংবাদকে বলেন, ‘জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভাষণ দিয়েছেন তা একটি স্পষ্টভাষী রাষ্ট্রনায়কের ভাষণ। তিনি এই ভাষণের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বকে কিভাবে দেখতে চান— তা দৃঢ়ভাষায় তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেছেন, আমরা যুদ্ধ চাই না; আমরা শান্তি চাই। আমরা অস্ত্রের কর্তৃত্ব চাই না; শান্তি চাই। যারা এই সকল কার্যক্রমের সাথে জড়িত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ভাষণ তাদের জন্য ক্লিয়ার ম্যাসেজ।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পষ্টভাষী বক্তব্যের প্রসংশা করে ফারুক খান বলেন, ‘কোভিড-১৯ সংকটকালীন সময়ে বৈশ্বিক সংকট নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের নেতাদের যে কথা বলা প্রয়োজন, তাদেরও যে দায়িত্বশীল হতে হবে— প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তা তুলে ধরেছেন।

তিনি তুলে ধরেছেন, যারা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের সাথে জড়িত, তাদের সংযত হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়েছেন, একটি দেশের রাজনৈতিক নেতা ও জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোভিড-১৯ কালেও দেশের উন্নয়ন করা যায়। করোনার মতো সংকটকে সফলভাবে মোকাবিলা করা যায়। বাংলাদেশের রোহিঙ্গাসহ সব সমস্যা সমাধানের জন্য জাতিসংঘকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে, তাও সুন্দরভাবে উপস্থান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আশা করি, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বিশ্ব ও বিশ্বের মানবকল্যাণে কাজ করবে।’ 
 
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ বৈশ্বিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন দাবি করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান আমার সংবাদকে বলেন, ‘জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভাষণ দিয়েছেন তা এক কথায় অসাধারণ। এই ভাষণ যুগোপযোগী ও সময়োপযোগী।’ আব্দুর রহমান বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বর্তমান সময়ে যতগুলো জরুরি সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন সে সব বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেই প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে প্রতিটি বিষয় যুক্তি সহকারে তুলে ধরেছেন।

এই ভাষণ প্রসংশার দাবিদার। নেতৃত্বের যে বিচক্ষণতা এবং গুণাবলি— এই গুণাবলি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন।’ জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ বৈশ্বিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের এ প্রেসিডিয়াম সদস্য।