পল্লবীতে সা‍‍’দ মুছা গ্রুপের জমি দখলের অভিযোগ

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২২, ১০:৫৬ এএম
পল্লবীতে সা‍‍’দ মুছা গ্রুপের জমি দখলের অভিযোগ

রাজধানীর মিরপুরে পল্লবীতে সা'দ মুছা গ্রুপের প্রায় ১৫ শতক জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দখল করা জমির অংশে স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। এ ব্যাপারে পল্লবী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সা'দ মুছা গ্রুপের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মেজর (অব.) মইনুল হাসান।

সা'দ মুছা গ্রুপ সূত্রে জানা গেছে, পল্লবী থানার ৪০০ গজের মধ্যে সা'দ মুছা গ্রুপের জমির অবস্থান। স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সহায়তা নিয়ে একেএম আব্দুস সালাম প্রায় ২০০ জন লোক নিয়ে আজ শনিবার সকাল ৮টায় সা'দ মুছা গ্রুপের বাউন্ডারি ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে আরেকটি সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে।

এ ব্যাপারে পল্লবী থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরও থানা পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন গ্রুপটির প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মেজর (অব.) মইনুল হাসান।

অভিযোগপত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে করিম উদ্দিন ভরসার কাছ থেকে ২০৮ শতক সম্পত্তি সা'দ মুছা গ্রুপ কিনেছিল। এসব সম্পত্তি গ্রুপের দখলেই ছিল। ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক টি-বোর্ড শাখা চট্টগ্রামের কাছে দায়বদ্ধ রয়েছে ওই সম্পত্তি।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে- পরবর্তীতে মিরপুর ডিওএইচএস রাস্তার জন্য গ্রুপের কিছু জমি অধিভুক্ত হওয়ায় অবশিষ্ট জমিতে বালু ভরাট করে চারদিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। সেখানে সা'দ মুছা গ্রুপের কয়েকজন কর্মীর থাকার জন্য একটি ঘরও বানানো হয়।

তবে হঠাৎ করে গত বছর বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানার বোয়ালিয়া গ্রামের মৃত এমএম আব্দুল হামিদের ছেলে একেএম আব্দুস সালাম গ্রুপ ওই সম্পত্তির ওপর হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে। সেই মামলাটির রায় আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের লিভ টু আপিল দায়ের করা হয়। লিভ টু আপিল বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে- এসবের পরও স্থানীয় ভূমিদস্যু একেএম সালাম, জামান মাস্টার, চিহ্নিত সন্ত্রাসী কালা জুয়েল, সোহরাওয়ার্দী বাবু, টিটু, নান্নাসহ অজ্ঞাত দুই শতাধিক বহিরাগত নিয়ে বেআইনিভাবে জমিতে প্রবেশ করে সা'দ মুছা গ্রুপের কর্মচারী সাব্বির, সাদী, আলামিনকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে বের করে দেয় এবং জমিতে তাদের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়- এ পরিস্থিতিতে সা'দ মুছা গ্রুপের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মেজর (অব.) মইনুল হাসান ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।

এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা আকরাম হোসেন সরদার বলেন, এই ভূমিখেকো সালাম এরকম নিরীহ ভদ্র লোকদের ফাঁকা সম্পত্তি পেলেই তার অপকর্মের হোতা জামান মাস্টারকে নিয়ে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে দখলের পাঁয়তারা করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। এজন্য তাদের রয়েছে বিশাল ক্যাডার বাহিনী।

সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রচুর জনসমাগম হয়েছে। একজন ইট নিয়ে দেয়ালের কাজ করছেন। তাকে বেআইনি এ কাজের ব্যাপারে প্রশ্ন করতেই বলেন, ওসি ডিসির সঙ্গে কথা বলেন তারা জানে সব কিছু। বোঝেন না কিছু ফিডার খান?

এ ব্যাপারে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ফোন দিলে তিনি থানায় গিয়ে দেখা করে কথা বলতে বলেন। তবে তিনি আর থানায় আসেননি এবং ফোনও ধরেননি।

পরে অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কাওসারের সঙ্গে কথা বললে তিনি সালামের পক্ষ নিয়ে বলেন, তাদের রায় কাগজপত্র ঠিক আছে; তারা কাজ (দেয়াল নির্মাণ) করতেই পারে। পাল্টা উনাকে যখন প্রশ্ন করা হলো- এত লোক নিয়ে একজনের সীমানা প্রাচীর ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করাকে কী বলে? তখন তিনি চুপ ছিলেন।

এ ব্যাপারে মিরপুর জোনের ডিসিকে কল দেওয়া হলে তিনি প্রথমে বলেন, সরেজমিন আমাকে জানান। পরে আবার কল দিলে তিনি একেএম সালামের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন এবং তিনি বলেন- তারা জিডি করে কাজ করছে। এ কথা বলেই লাইন কেটে দেন তিনি।

কেএস