মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, প্রাণিসম্পদ খাতে আরও বেশি প্রণোদনা কীভাবে দেওয়া যায়, তা সরকার আন্তরিকভাবে বিবেচনা করছে।
বলেন, দুধ আজ শুধু একটি পণ্য নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এজন্য আমাদের মায়েরা বলে থাকেন, ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।’
উপদেষ্টা রোববার সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে (কেআইবি) বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
তিনি জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের প্রাণিসম্পদ খাতের বিভিন্ন সেক্টরে কর্মসংস্থানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধারা কিছুদিন আগেও শক্তিশালী ও কর্মক্ষম ছিলেন। আহত হওয়ার কারণে যেন তারা আমাদের মূল স্রোতের বাইরে চলে না যান, সেজন্য তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে।”
উপদেষ্টা আরও বলেন, “আমরা একটি পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি, প্রতিবছর এক লক্ষ ১৮ হাজার টন গুঁড়ো দুধ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। এ আমদানি ব্যয় মেটাতে আমাদের বছরে প্রায় ৪০০০ কোটি টাকা খরচ হয়। আগামীতে যাতে এই ধরনের দুধ আমদানি বন্ধ হয় এবং বাংলাদেশে উন্নতমানের দুধ উৎপাদন হয়, সে বিষয়ে আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে। এতে বিদেশি আমদানি কমবে এবং দেশের খামারিরাও উপকৃত হবেন। প্রশ্ন হলো, সরকার কৃষি খাতে ভর্তুকি দিতে পারে, তাহলে খামারিদের জন্য কেন পারবে না?”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো মহিষের দুধের ব্যাপক উৎপাদন করে থাকে। যদিও মহিষের দুধ তেমন জনপ্রিয় না, তবুও মানুষের মধ্যে এর প্রতি চাহিদা রয়েছে। এছাড়া ছাগলের দুধে ঔষধি গুণ রয়েছে। তাই আগামীতে বাংলাদেশ দুধ উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।”
এর আগে উপদেষ্টা রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শাখার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে স্কুল মিল্ক ফিডিং কার্যক্রমের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন এবং দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. জসিম উদ্দিন।
"দুগ্ধের অপার শক্তিতে মেতে উঠি একসাথে" এ প্রতিপাদ্যে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ড. মো. বয়জার রহমান।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. খালেদা ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. রায়হান হাবিব ও প্রফেসর ড. আরিফুল ইসলাম। খামারি প্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্যকে নিরাপদ পুষ্টির অন্যতম উৎস হিসেবে জনপ্রিয় করা, সেক্টরের উন্নয়ন, জনাকর্ষণ বাড়ানো ও বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য প্রতিবছর বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালন করা হয়।
ইএইচ