প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা জরুরি

আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৫, ০২:৩৯ পিএম
নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা জরুরি

মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “মাছ আমিষের অন্যতম প্রধান উৎস; প্রাণিজ আমিষ হিসেবে মাছ বাঙালির খাদ্যসংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।”

শনিবার সকালে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই), ময়মনসিংহ কর্তৃক আয়োজিত “বার্ষিক গবেষণা অগ্রগতি (২০২৪-২৫) পর্যালোচনা ও গবেষণা পরিকল্পনা (২০২৫-২৬) প্রণয়ন” শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “বিশেষ করে ছোট মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষায় বিএফআরআইকে আরও সচেষ্ট হতে হবে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ, বিএফআরআই এবং মৎস্য অধিদপ্তরকে অভিন্ন লক্ষ্যে আন্তঃসমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। তবেই দেশের মৎস্যসম্পদের গুণগত পরিবর্তন সম্ভব।”

বিজ্ঞানীদের জাতির মূল্যবান সম্পদ হিসেবে অভিহিত করে উপদেষ্টা বলেন, “তারা যেন গবেষণায় মনোনিবেশ করে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারে—সেজন্য সরকার সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিজ্ঞানীদের এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে, যা সাধারণ মানুষের কাছে সহজবোধ্য এবং উপকারী হবে। এসব প্রযুক্তি যদি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারিত করা যায়, তাহলে দেশে মাছের সংকট থাকবে না।”

তিনি আরও বলেন, “কৃষিকাজে ব্যবহৃত কীটনাশক হাওর এলাকার মাছের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় জাতীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কীটনাশক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কমিটির কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে হাওর অঞ্চলে কীটনাশকের ব্যবহার হ্রাস পাবে এবং জলজ প্রাণী রক্ষা পাবে বলে আমরা আশা করছি।”

ফরিদা আখতার আরও বলেন, “বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় ও হুমকির মুখে থাকা মাছ শনাক্ত করতে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) মাছগুলোকে লাল (বিপন্ন), হলুদ (ঝুঁকিপূর্ণ) ও সবুজ (নিরাপদ) শ্রেণিতে ভাগ করেছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিএফআরআই এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণা বড় ভূমিকা রাখতে পারে। সফল হলে এটি দেশের মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে।”

কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, “গবেষণালব্ধ জ্ঞান মাঠপর্যায়ে পৌঁছে দিতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএফআরআইয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি।”

বিএফআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় ময়মনসিংহ বিভাগের মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, বিএফআরআইয়ের বিজ্ঞানীবৃন্দ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, মৎস্য খামারি ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

কর্মশালায় স্বাদুপানি কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুন উর রশিদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের গবেষণা পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

ইএইচ