ঝড়ে বিধ্বস্ত মাদ্রাসা, খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি  প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২২, ০৭:১৭ পিএম
ঝড়ে বিধ্বস্ত মাদ্রাসা, খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সিংহেরাকাঠী কুরআন সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার পাঠদানের টিনশেড ভবনটি  ঝড়ে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এ কারণে ওই মাদ্রাসার অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেছে। চলছে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান। 

দ্রুত সময়ের মধ্যে মাদ্রাসার ভবন নির্মাণ করে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ফিরিয়ে আনার দাবি করেছে ভুক্তভোগি শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসি।

গতকাল  সরেজমিনে দেখা যায়,ঝড়ে বিধ্বস্ত ভবনটি পড়ে আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত রোববার দুপুরে ঝড়ের তান্ডবে পাঠদানের একমাত্র ভবনটি দুমড়েমুচড়ে যায়। বিকল্প কোনো সুযোগ না থাকায় ওই মাদ্রাসার অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

মাদ্রাসা সুত্রে জানা গেছে, ১৯৮০ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৬ সালে এমপিওভূক্ত হয়। বর্তমানে মাদ্রাসাটিতে প্রথম শ্রেণি থেকে দশম (দাখিল) শ্রেণি মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪৭৫। গত ১১ জুন থেকে থেকে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

ওই মাদ্রাসার সুপার মো. আবু ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন,মাদ্রাসাটিতে দুটি টিশেড ভবন ছিল। এর মধ্যে ১৫০ ফুট লম্বা ও ৩০ ফুট চওড়া উত্তর পাশের ভবনটিতে পাঠদান এবং পশ্চিম পাশের ভবনটি প্রশাসনিক ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এর মধ্যে যে ভবনটিতে পাঠদান হতো সেই ভবনটি গত রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে হঠাৎ ঝড়ো হাওয়ায় দুমড়েমুচড়ে যায়। এ কারণে পরের দিন সোমবার থেকে আর পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন,বিষয়টি তিনি মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)মহোদয়কে সোমবার লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মানসুরা আক্তার বলে,‘করোনার কারণে গত দুই বছর পড়াশুনা করতে পারিনি। পড়াশুনা শুরুর পর অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা দিতে ছিলাম, তাও আবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে বন্ধ হয়ে গেল ‘ মানসুরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ভবন নির্মাণ করে পাঠদানের ব্যবস্থা করার দাবি জানায়।

ওমর ফারুক নামে ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষক বলেন,‘ভাগ্য ভালো যে, পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা বাড়ি পৌছানোর পর ঝড় শুরু হয়েছে। আর তা না হলে যেভাবে মাদ্রাসাটির ভবনটি  দুমড়েমুচড়ে পড়েছে তাতে হতাহতের ঘটনা ঘটতো।’

কলেজ শিক্ষক মো. আনিচুর রহমান। তিনি ওই মাদ্রাসার একজন অভিভাবক। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,‘অনেক বছরের পুরানো একটি মাদ্রাসা, পড়াশুনা ও ফলাফলেও ভালো। এ কারণে আমার মেয়েকে এই মাদ্রাসায় ভর্তি করেছি। অথচ মাদ্রাসাটিতে কোনো পাকা ভবন নাই।’ তিনি টিনশেড ভবন নয়,পাকা ভবন নির্মাণের দাবি জানান।

ইউএনও মো. আল-আমিন বলেন,‘সুপার সাহেব তাঁকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষার্থীরা যাতে পাঠদানে ফিরতে পারে খুব শিগগির তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আমারসংবাদ/এআই