ব্রহ্মপুত্রে পানি কমলেও, জামালপুরে দেখা দিয়েছে ভাঙন

আমারসংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২২, ০৩:৫০ পিএম
ব্রহ্মপুত্রে পানি কমলেও, জামালপুরে দেখা দিয়েছে ভাঙন

 জামালপুরে মেলান্দহে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও গাছপালা। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী মানুষ। নদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীব্র আকারে ভাঙনে শুরু হয়েছে। 

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে যমুনার বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে গত ২৪ঘন্টায় ৩০ সেন্টিমিটার পানি হ্রাস পেয়ে বিপদ সীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে।

নদের গর্ভে চলে গেছে অন্তত ১০ টি বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে অর্ধশত বাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি, একটি মাদ্রাসা ও মসজিদ। মেলান্দহ উপজেলা শ্যামপুর ইউনিয়নের টুপকারচর এলাকার শেষ প্রান্ত থেকে ৪ নং চর পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন কবলিত লোকজন তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। ভাঙছে ফসলি জমি। গাছপালা কেটে নিচ্ছে। প্রতি বছর বর্ষার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হয়। প্রতিবছর বসতভিটা ফসলি জমি, রাস্তাঘাট বিলীন হয়েছে। এ বছরও ভাঙন শুরু হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দ্রুত এই ভাঙন রোধ করা না গেলে বিলীন হবে বসতভিটাসহ ফসলি জমি। তাঁরা ভাঙনরোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।'

ভাঙন কবলিত ৪ নং চরের নতুন পাড়া এলাকার কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, 'আমগোরে ঘরবাড়ি জমিজমা সবকিছুই ভাঙ্গা নিয়া গেল ব্রহ্মপুত্র। আমরা এখন নিঃস্ব। কই যামু তাঁর কোন ঠিক ঠিকানা খুইজা পাইতাছিনা।

ব্রহ্মপুত্র পাড়ের বাসিন্দা রাকিব হাসান বলেন, ‘টুপকার চরের পাইলিং থেকে ৪ নং চরের নতুন পাড়া পর্যন্ত নদে ভাঙন শুরু হয়েছে। পাড় গুলো বেলে মাটির হওয়ায় নিমেষেই ভেঙে যাচ্ছে। তাই দ্রুত ভাঙন না রুখলে জনবসতিও ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাবে।

একই এলাকার কৃষক মতিউর রহমান আতঙ্কের শঙ্কা প্রকাশ করে  বলেন,'আমাদের জমিজমা সবকিছুই ভেঙে গেছে। এখন বসত-বাড়ি ভাঙতে শুরু হয়েছে। আতঙ্কের মধ্যে আছি। রাতে বৃষ্টি হলে ঘুমাতে পারি না, কখন ঘরটা ভেঙে যায়। বসতবাড়ি ভেঙে গেলে ঘর তোলার আর জমি নেই।’

টুপকারচর গ্রামের বাসিন্দা হামিদুর রহমান বলেন, গত বছর অনেক ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। ওই সব জমি থেকে ধান,পাট অবাক করা হয়তো। অনেক জমি-জমা ভেঙ্গে গেছে। এ ছাড়া আরও অনেকেই বাড়ি, ভিটামাটি হারিয়েছেন।

শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস, এম, সায়েদুর রহমান বাধ নির্মানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে  বলেন, বলেন, ‘৪ নং চরে নতুন পাড়ায় ভাঙন শুরু হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে অনেকেই গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়ে অন্য গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। দ্রুত ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই ঘরবাড়ি ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হবে।’

এ বিষয়ে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, ‘আমি ৪ নং চরে গিয়ে দেখে এসেছি। কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা রয়েছে সেগুলো সেভ রয়েছে। নতুন করে কিছু জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বরাদ্দ আনার চেষ্টা করছি। বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু হবে।