নওগাঁয় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে এসি

নওগাঁ প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২৩, ০২:৫৭ পিএম
নওগাঁয় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে এসি

আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও হতদরিদ্র পরিবারগুলোর মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে সারাদেশে গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। দরিদ্র হিসেবে গৃহহীনের কোটায় আশ্রয়নের ঘর পাওয়া এক ব্যক্তির ঘরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র (এসি) লাগানোর পর এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর মনে প্রশ্ন যদি উনি দরিদ্রই হন, তাহলে কিভাবে তার ঘরে এসি ব্যবহার হয়?

দরিদ্র হিসেবে গৃহহীনের কোটায় আশ্রয়নের ঘর পাওয়া ওই মহিলা নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের রেজাউল ইসলামের স্ত্রী পারুল বেগম। বর্তমানে তিনি গোবিন্দপুর গভীর নলকূপের অপারেটর। তার স্বামী এবং ছেলে প্রতিমাসে মাসে ৫০হাজার থেকে এক লাখ টাকার মতো আয় করেন বলে সব জায়গায় দাম্ভিকতা দেখান। কিন্তু কোন খাত থেকে তাদের এই মোটা অংকের টাকা হয় তা এলাকাবাসীর অজানা। পারুলের ছেলে পারভেজ প্রায় দেড় লাখ টাকা মূল্যের ডিসকভার এবং স্বামী রেজাউল ইসলাম লক্ষাধিক টাকা মূল্যের টিভিএস মোটরসাইকেলে ব্যবহার করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মান্দা উপজেলায় হাতে গোনা কিছু সরকারি অফিস, মসজিদ এবং বাসাবাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র (এসি) ব্যবহার হয়। এ ছাড়া এলাকার অন্যান্য বাসা-বাড়িতে বা বহুতল ভবনে সচরাচর এসির ব্যবহার চোখে পড়ে না। অথচ সরকারের দেওয়া আশ্রয়ণের ঘরে ব্যবহার হচ্ছে এসি। দলীয় সুপারিশে তিনি এ ঘরটি পেয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য এ উপজেলায় বেশকিছু গৃহ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এর মধ্যে কিছু ঘর নির্মাণাধীন থাকলেও বাকি ঘরগুলোর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। এগুলো তালিকাভুক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর মাঝে ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এ উপজেলায় দলীয় সুপারিশে বেশ কিছু ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। যার অধিকাংশই  ক্ষমতাসীন দল ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে বরাদ্দ নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।

এ বিষয়ে নিজ নামে আশ্রয়ণের ঘর পাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে পারুল বেগমের স্বামী রেজাউল ইসলাম  জানান, সরকারিভাবে আমরা এই ঘরটি পেয়েছি। আমরা গরম সহ্য করতে পারি না। তাই ঘরে এসি লাগিয়েছি। এতে দোষের কী হলো।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, স্থানীয় এমপি মহোদয় এবং ইউএনওর সুপারিশে গৃহহীনদের তালিকায় গোবিন্দপুর (শাহানা পাড়া) গ্রামে পারুল বেগম নামে একটি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি নিজ উদ্যোগে ঘরে এসি লাগিয়েছেন বলে লোকমুখে শুনেছি।

মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক  বলেন, দরিদ্র ও অসহায় বা এমন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোকে সরকারি খরচে গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছে বর্তমান সরকার। কোনো স্বচ্ছল ব্যক্তির এ ঘর পাওয়ার কথা নয়। তার পরও এ ধরনের অভিযোগের সূত্র ধরে বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে।

আরএস