ইউরোপে রপ্তানি হবে গোসাইরহাটের কাঁচা মরিচ

গোসাইরহাট (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৩, ০২:৪২ পিএম
ইউরোপে রপ্তানি হবে গোসাইরহাটের কাঁচা মরিচ

গোসাইরহাটের কাঁচা মরিচ ইউরোপে রপ্তানির কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। খুব শীঘ্রই বাণিজ্যিকভাবে মশলা জাতীয় এ ফসল বিদেশে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন গোসাইরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাবুদ্দিন।

শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার জয়ন্তি নদীর দুই পাড়সহ আলাওলপুর, কোদালপুর ও কুচাইপট্টিতে প্রতি বছরের মতো এ বছরও মশলা জাতীয় কাঁচা মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা বলছেন কৃষি বিভাগের পরামর্শ, অনুকূল আবহাওয়া, জয়ন্তি নদীর পলিমাটি ও পানির কারণে মরিচ চাষ ভালো হয়েছে।

তিনমাস পরিশ্রম করে মশলা জাতীয় ফসল কাঁচা মরিচ চাষ করে ৪ গুণ লাভবান হয়েছেন সাইখ্যা গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ হাওলাদার। তিনি বলেন, এক মণ কাঁচা মরিচ ৩ হাজার ৭০০ থেকে ৪ হাজার টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করি। রাস্তাঘাট উন্নত হওয়ায় পাইকাররা ক্ষেত থেকে মরিচ সংগ্রহ করে। অতিরিক্ত কোনো খরচ করতে হয় না। ২৫ হাজার টাকা খরচ করে ১ লক্ষ টাকার মরিচ বিক্রি করেছি। বিদেশে রপ্তানি হলে আমার মতন অনেক কৃষকেরই ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যাবে।

কৃষক করিম মৃধা বলেন, কৃষি অফিসারের পরামর্শে আমি এবছর বিজলী প্লাস জাতের মরিচ চাষ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। মরিচের দামও অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি। আমাদের মতো প্রান্তিক কৃষকের ফসল রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। এটা জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।

ক্ষেত থেকে মরিচ সংগ্রহ করতে যারা সাহায্য করেন তাদের বেশির ভাগই নারী। জরিনা নামে একজন মরিচ সংগ্রহকারী বলেন, মরিচ রপ্তানি হলে আমাদের বাড়তি আয়ের সুযোগ অনেক বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে আমরা ৬ ভাগে মরিচ সংগ্রহ করে দেই কৃষককে। একজন ব্যক্তি একদিনে ৫০-৬০ কেজি মরিচ সংগ্রহ করতে পারে। দিনে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় হয় আমাদের।

আমেনা নামে অন্য আরেকজন মরিচ সংগ্রহকারী বলেন, বাড়ির কাজের ফাঁকে ফাঁকে মরিচ সংগ্রহের কাজ করে বাড়তি আয়ের সুযোগ হয়েছে আমাদের। মরিচ সংগ্রহের বিষয়টি নিজের উপর নির্ভর করে। ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন একজন। বাড়তি আয়ের এই সুযোগে অনেকেই নিজের সখের জিনিসপত্রগুলো কিনতে পারছেন। ইউরোপে মরিচ পাঠানো হলে গ্রামের কৃষকদের পাশাপাশি আমাদের অর্থনৈতিক কষ্ট দূর হয়ে যাবে।

গোসাইরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সাথে গোসাইরহাটের কাঁচা মরিচ ইউরোপে রপ্তানি করার প্রক্রিয়া দ্রুততার সাথে চলমান রয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই গোসাইরহাটের কাঁচা মরিচ বিদেশে রপ্তানি করতে পারব। গোসাইরহাট উপজেলায় মশলা চাষ খুবই জনপ্রিয়। মশলা জাতীয় ফসলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয় মরিচ। আমাদের চরাঞ্চলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে বোরা মরিচ হয়ে থাকে। তবে জনপ্রিয় জাত হচ্ছে বিজলী প্লাস। এ বছর ১,৫০০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। আগামিতে জমির পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে।