দিশেহারা কৃষক ও মৎস্যচাষী

নান্দাইলে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে ১২ হাজার হেক্টর ফসলি জমি ও ফিসারী

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৩, ০৬:৩০ পিএম
নান্দাইলে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে  ১২ হাজার হেক্টর ফসলি জমি ও ফিসারী

ময়মনসিংহের নান্দাইলে একরাতের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রোপা আমান ফসল সহ বিভিন্ন কৃষি জমি ও মাছের ফিসারী। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মুষলধারে বৃষ্টিপাতের কারণে নান্দাইল উপজেলার হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি ও মাছের ফিসারী পানির নীচে তলিয়ে গেছে। অর্থ ও পরিশ্রম ব্যয় করে আমন আবাদ করেছিল কৃষকেরা।

কিন্তু বৃষ্টির পানিতে ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যাওয়া দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। পাশাপাশি মৎস্য চাষকৃত ফিসারী, ডোবা ও পুকুরের পাড় ডুবে গিয়ে মাছ বেরিয়ে যাওয়ায় হতাশায় ভোগছে মৎস্য চাষীরা। নান্দাইল উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে একই অবস্থা। 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে ২২ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ করা হয়েছিল। কিন্তুু প্রাকৃতিক কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ১২ হাজার হেক্টর ফসলি ধান জমির মধ্যে ৫ হাজার হেক্টর জমি সম্পুর্ণ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এছাড়া আংশিক নিমজ্জিত রয়েছে ৭ হাজার হেক্টর। অন্যান্য কৃষি আবাদ (সবজি,পান ও আখ) নিমজ্জিত হয়েছে ১৭৫ হেক্টর জমি। 

অপরদিকে উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, পানি বৃদ্ধির কারণে প্রায় ৫৫০ হেক্টর ফিসারী পানির
নীচে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ৯শত মেট্টিক টন মাছ বের হয়ে যাওয়া মৎস্য চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এদিকে মৎস্য শিকারীরা ব্যস্ত সময় পার করছে। বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরার সামগ্রী দিয়ে মাছ ধরার আনন্দে মেতে উঠেছে তারা। এ যেন কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ। অপরদিকে মানুষের বাড়ি-ঘর ও রাস্তা-ঘাটও পানির নীচে তলিয়ে গেছে। এতে করে যোগাযোগ ব্যাবস্থা সহ জীবন-যাপনে দুর্ভোগের ছায়া নেমে এসেছে। এ বিষয়ে আচারগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান ও মৎস্যচাষী রফিকুল ইসলাম রেণু বলেন, চোখের সামনে ২৫ লাখ
টাকার মাছ ভেসে গেলো। কিছুই করতে পারলাম না। 

মৎস্য চাষী আলী আমজাদ খান বলেন, ২৮ লাখ টাকার মাছ আগাম বিক্রি দেওয়া ছিল। এখন সাকুল্য টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে। বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা জানান, প্রকৃতির খেলার সাথে আমাদের কিছুই করার নেই। এদিকে আবার দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি। ধান না হলে আমরা খাব কি? 

তবে সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গরা জানান, নদী-নালা-খাল বিল ভরাট হয়ে যাওয়া বা পুন খনন না হওয়ায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছেনা। ফলে বন্যার আকার ধারন করায় ফসলাদি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, প্রকৃতির উপর কারো হাত নেই। তবে পানি নেমে গেলে পরবর্তী ফসল রক্ষায় আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদেরকে পরামর্শ সহ সার্বিক সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে। 

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাহনাজ নাজনীন জানান, ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্যচাষীদের তালিকা তৈরী হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগীতা করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

আরএস