অভয়নগরে বোরো ধান কাটা ও ঘরে তোলায় ব্যস্ত কৃষকরা

রাজয় রাব্বি, অভয়নগর (যশোর) প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ০২:৫৮ পিএম
অভয়নগরে বোরো ধান কাটা ও ঘরে তোলায় ব্যস্ত কৃষকরা

যশোরের অভয়নগর উপজেলায় বোরো ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজ শুরু হয়েছে। নতুন ধান ঘরে তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠ জুড়ে সোনালী ধান কাটার উৎসব চলছে। বাম্পার ফলনে কৃষকদের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি।

বুধবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ জমির ধান পেকে গেছে। কৃষকরা কেউ ধান কাটছেন, কেউ ধানের আটি বাঁধছেন। কেউ আবার ধান কাঁধে বা যানবাহনে করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে কৃষকরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর অভয়নগরে মোট ১২ হাজার ৭৩৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। প্রতি বিঘায় (৩৩ শতকে) ফলন হয়েছে গড়ে ৩০ মণ। ইতিমধ্যে ৭ হাজার ৬৪৩ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। আবাদকৃত জমির প্রায় ৭০ শতাংশ ধান পেকে গেছে। উল্লেখ্য, অভয়নগর উপজেলার প্রায় ৯০ শতাংশ কৃষক ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল।

চলিশিয়া ইউনিয়নের একতারপুর গ্রামের কৃষক শাহ্ মঈন আলম বলেন, “এবার ৪ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকট রয়েছে, আর মজুরিও বেশি—প্রতিজন শ্রমিককে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে ৮-১০ দিনের মধ্যেই ধান কাটা, মাড়াই ও শুকিয়ে ঘরে তোলার কাজ শেষ হবে।”

সুন্দলী ইউনিয়নের ভাটবিলা গ্রামের সমীরণ কুমার বিশ্বাস বলেন, “তাপমাত্রা অনেক বেশি, তার ওপর শ্রমিক সংকট থাকায় আমরা নিজেরাই ধান কাটছি। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সহায়তায় ধানচাষে আগ্রহ বেড়েছে। যদি সরকার প্রযুক্তিনির্ভর ধান কাটার ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে কৃষকদের জন্য আরও ভালো হতো।”

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. লাভলি খাতুন বলেন, “বোরো মৌসুমে কৃষকরা যাতে লাভবান হয়, সেজন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজর রেখেছি। সঠিক সার প্রয়োগ, পানি সাশ্রয় ও ধানের পরিচর্যা বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ফলন পেয়েছেন। কৃষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, ৮০ শতাংশ ধান পাকলেই তা কেটে ঘরে তুলতে হবে।”

ইএইচ