মাগুরা সদর হাসপাতাল সড়কে দখলের মহোৎসব

মিরাজ আহমেদ, মাগুরা প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ০৩:০২ পিএম
মাগুরা সদর হাসপাতাল সড়কে দখলের মহোৎসব
  • ভোগান্তিতে রোগী ও পথচারীরা

  • দ্রুত উচ্ছেদ অভিযানে মিলতে পারে স্বস্তি

মাগুরা সদর হাসপাতালের সামনের সড়ক এবং হাসপাতাল চত্বর এখন যেন অটোরিকশা স্ট্যান্ড, বাজার বা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জায়গা! হাসপাতালের সম্মুখভাগ ও আশপাশের এলাকা দখলে নিয়ে বসেছে হকার, দোকানি, পরিবহন মালিকসহ নানা শ্রেণির দখলদার। সরকারি সড়ক, ফুটপাত এমনকি হাসপাতালের ভেতরের রাস্তাও দখল হয়ে পড়েছে নানা ব্যবসায়িক কার্যক্রমে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী, পথচারী, শিক্ষার্থী ও পৌরবাসী।

বুধবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতাল সড়কের দুই পাশে গড়ে উঠেছে মুদি দোকান, হোটেল, ওষুধের দোকান, ফল-সবজির ভ্রাম্যমাণ দোকান। কোথাও আবার এম্বুলেন্স ও মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড, এমনকি ট্রাক-লরি থেকে মালামাল ওঠানো-নামানোর কাজ চলছে সড়কের ওপরই। ফুটপাত দখল করে রাখা হয়েছে হকারদের ভ্যানগাড়ি ও খুপড়ি দোকান।

ড্রেনের উপর থাকা চলাচলের স্ল্যাবগুলোও দোকানদারদের দখলে চলে গেছে।

হাসপাতালের ভেতরের রাস্তায় দেখা গেছে, মোটরসাইকেল পার্কিং, নির্মাণ সামগ্রী রাখা ও ভ্রাম্যমাণ দোকান বসার দৃশ্য। বাথরুমের অর্ধেকেরও বেশি দরজাবিহীন, আবার অনেক বাথরুমে পানি সরবরাহ নেই—ফলে এসব জায়গা মশা-মাছির প্রজননস্থলে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের প্রধান ফটকের পাশেও গড়ে উঠেছে একাধিক দোকান, যার কারণে স্বাস্থ্যবিধি ও পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

চিকিৎসার জন্য আসা রোগীর স্বজন ফারুক জানান, রবিবার এক বন্ধুকে হাসপাতালে আনতে গিয়ে প্রবেশ পথেই যানজটে আটকে পড়েন। ওই যানজটে ২০ মিনিট দেরি হয়, এতে বন্ধুর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তিনি বলেন, “সড়কের দু’পাশ দখলের কারণে চলাচলের জায়গা সংকুচিত হয়ে গেছে, যে কারণে এই যানজট।”

পথচারী হোসেন বলেন, “এই সড়কটি যেন দখলদারদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি হয়ে গেছে। প্রশাসন কীভাবে এতসব দেখেও না দেখার ভান করে তা বুঝে আসে না।”

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দখলদারদের উচ্ছেদে প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও তা ৫-১০ দিনের বেশি টিকে না। এরপর আবারও চলে আসে আগের অবস্থায়।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মহসিন ফকির বলেন, “হাসপাতালের দেয়াল ঘেঁষে গড়ে উঠা দোকানগুলোর বিষয়টি আমরা জানি, তবে তা উচ্ছেদ করা আমাদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। বর্তমানে পরিচ্ছন্নতা কর্মী রয়েছে মাত্র ১২ জন, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। গাড়ি চলাচল ও যানজট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে কিছু গাড়ি হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ঢুকছে, তবে শিগগিরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’ বহিরাগত দালাল নির্মূল ও জনবল নিয়োগ নিয়ে মামলা চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।”

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যেই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

ইএইচ