নোয়াখালীতে মাদরাসায় ছাত্রকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ

নোয়াখালী প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ০৮:৪১ পিএম
নোয়াখালীতে মাদরাসায় ছাত্রকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ

নোয়াখালীর সদর উপজেলার একটি মাদরাসা থেকে জোবায়ের ইবনে জিদান (১২) নামে এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে, মাদরাসার শিক্ষকরা নির্যাতন করে তাকে হত্যা করেছে।

বুধবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার নোয়াখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহব্বতপুর এলাকার তানজিরুল কোরআন সোবহানিয়া মাদরাসা থেকে জিদানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

জিদান সদর উপজেলার মধ্য চর উরিয়া গ্রামের ওমানপ্রবাসী আমিরুল ইসলাম সোহেলের ছেলে এবং মাদরাসার হিফজ বিভাগের আবাসিক ছাত্র ছিল।

জিদানের মা সাবরিনা খাতুন জুমা জানান, তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে জিদান মাদরাসায় থেকে হিফজ পড়ছিল। মঙ্গলবার বিকেলে জিদানের দাদা নুরুল হক বাবুল মাদরাসায় নাতিকে দেখতে গিয়ে ফ্লোরে বমি করা অবস্থায় দেখতে পান। তখন মাদরাসার মুতামিম (প্রধান) আফজাল হোসাইন বলেন, “আপনার নাতি পড়াশোনা করতে পারে না, তাই শাস্তি দিয়েছি।”

জুমা আরও অভিযোগ করেন, বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মাদরাসার মুতামিম তাকে ফোন করে জানান, “আপনার ছেলে গলায় ফাঁস দিয়েছে, দ্রুত নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে যান।” তিনি দাবি করেন, তার ছেলেকে মারধর করে হত্যা করে ফাঁসির নাটক সাজানো হয়েছে। এর আগেও ছেলেকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল।

অন্যদিকে, মাদরাসার মুতামিম আফজাল হোসাইন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “বিকেলে জিদান মাদরাসার শৌচাগারে ঢোকে। তখন আরও দুই ছাত্র বাইরে অপেক্ষা করছিল। তারা দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে দরজা খুলে জিদানকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় এবং আমাদের জানায়।”

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শাহরিয়ার বলেন, “ফাঁসের ক্ষেত্রে গলার পেছনে দাগ থাকার কথা নয়। কিন্তু জিদানের গলার পেছনে দাগ রয়েছে, যা আত্মহত্যার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”

এ বিষয়ে সুধারাম মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। মাদরাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ইএইচ