দেশি মাটিতে বিদেশি ফল, শালিখায় আঙ্গুরের চমক

শালিখা (মাগুরা) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মে ৩, ২০২৫, ০১:৪৩ পিএম
দেশি মাটিতে বিদেশি ফল, শালিখায় আঙ্গুরের চমক

বাড়ির চারপাশে লতানো গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে রসালো আঙ্গুর। গাছের গোড়ায় জমে আছে কৃষকের স্বপ্ন আর সম্ভাবনা। মাগুরার শালিখা উপজেলার এক প্রান্তিক কৃষক এখন আঙ্গুর চাষ করে বদলে ফেলেছেন নিজের ভাগ্য। দেশি মাটিতে বিদেশি এই ফলের সফল চাষে তাক লাগিয়েছেন এলাকার মানুষকেও।

শালিখার ধনেশ্বরগাতী ইউনিয়নের পিপরুল গ্রামের কৃষক জামাল মণ্ডল তার ২০ শতক জমিতে গড়ে তুলেছেন আঙ্গুর বাগান। লাল চয়ন, বাইক্লো, জিএস থ্রি ও জাম্বুরা—এই চার জাতের প্রায় ৬০টি চারা রোপণ করেছেন তিনি। ভারত ও যশোরের খাজুরা লেবুতলা থেকে সংগ্রহ করা এসব চারা দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছিল চাষ। প্রথম মৌসুমেই আশানুরূপ ফলন পেয়ে এবার বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেন জামাল।

জামাল মণ্ডল আমার সংবাদকে জানান, ‘গত বছর কিছু গাছে ভালো ফল পেয়েছিলাম। এরপর সাহস করে বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করি। বর্তমানে প্রতিটি গাছে গড়ে ৩০ কেজি পর্যন্ত আঙ্গুর ধরেছে। স্থানীয় বাজারে কেজিপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করছি। গত মৌসুমেই প্রায় এক লাখ টাকার ফল বিক্রি হয়েছে। এবার আরও বেশি বিক্রির আশা করছি।’

শুধু নিজের চাষ নয়, আগ্রহী স্থানীয় কৃষকদেরও সহযোগিতা করছেন জামাল। তিনি বলেন, ‘গত বছর প্রায় এক হাজার চারা স্থানীয় কৃষকদের মাঝে দিয়েছি। কেউ আগ্রহ দেখালে পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা করছি।’

এই আঙ্গুর বাগানে বছরে দুবার ফল সংগ্রহ করা যায়। কৃষকের ভাষায়, একদিকে পরিবারের চাহিদা পূরণ হচ্ছে, অন্যদিকে বাড়ছে আয়। কৃষি কাজের প্রতি মানুষের আগ্রহও বেড়েছে তার সাফল্য দেখে।

শালিখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘জামাল মণ্ডলের বাগানটি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আমাদের একজন কৃষি কর্মকর্তা তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছেন। তিনি এ বছর প্রায় পঞ্চাশ মণ ফলন আশা করছেন, যার বাজারমূল্য প্রায় পাঁচ লাখ টাকা।’

গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত খুলেছে জামাল মণ্ডলের এই উদ্যোগ। দেশের আবহাওয়া ও মাটিকে কাজে লাগিয়ে বিদেশি ফল চাষে এমন সফলতা অনুপ্রেরণা জোগাবে অন্য কৃষকদেরও—এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

বিআরইউ