রইস হত্যার প্রতিবাদে উত্তপ্ত চট্টগ্রাম: সুন্নিদের সড়ক অবরোধে পুলিশের ধাওয়া

চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রকাশিত: মে ৫, ২০২৫, ০৩:৩৮ পিএম
রইস হত্যার প্রতিবাদে উত্তপ্ত চট্টগ্রাম: সুন্নিদের সড়ক অবরোধে পুলিশের ধাওয়া

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিন কাদেরী হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ ও পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার সকাল থেকে নগরের মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, একে খান, অক্সিজেনসহ একাধিক স্থানে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সড়ক অবরোধ করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের নেতাকর্মীরা।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মুরাদপুর এলাকায় প্রায় ২০০ জন ‘সুন্নি জনতা’ ব্যানারে রইস উদ্দিন হত্যার বিচার দাবিতে সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে চেষ্টা করে। একপর্যায়ে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় অন্তত ১০ জনকে আটক করে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশি অভিযানের আগে স্থানীয় যুবকদের হাতে লাঠিসোঁটা দেখা যায় এবং তারা ভিডিও বা ছবি তুলছিলেন এমন লোকজনের মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। ঘটনাস্থলে মুখোমুখি অবস্থান নেয়া উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

এক অবরোধকারী বলেন, “আগে ছাত্রলীগ করতো, এখন নতুন একটা দল এসেছে। পুলিশ তখনও পুতুল ছিল, এখনও পুতুল। একজন সমন্বয়কের হাত ছিঁড়ে গেলে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার, অথচ একজন আলেমকে হত্যা করা হলো—এখনও কেউ ধরা পড়েনি।”

অন্য একজন অভিযোগ করেন, “মাস্ক পরা, লাঠিসহ একদল লোক এখানে আছে, যারা অবরোধকারীদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছে। আগে যেটা ছাত্রলীগ করতো, এখন ওরাই করছে। দেশের কিছুই বদলায়নি।”

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, “সকাল ৯টা থেকে ১০০-২০০ জন সড়ক অবরোধ করেন। আমরা বোঝানোর চেষ্টা করি, কিন্তু তারা রাস্তায়ই থাকতে চায়। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে টিয়ারশেল, সাউন্ডগ্রেনেড ছুড়ে এবং লাঠিচার্জ করে তাদের সরানো হয়। এখন পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আমরা কাজ করছি। সিটিজেনস ফোরাম আমাদের সঙ্গে আছে।”

অন্যদিকে, বন্দর থানার সল্টগোলা ক্রসিং এলাকাতেও একই ইস্যুতে সড়ক অবরোধ করা হয়। সকাল ১০টার দিকে ইশান মিস্ত্রি হাটে প্রায় ৫০-৬০ জন রেলপথ অবরোধ করেন। তবে সেখানে কোনো বিশৃঙ্খলা না ঘটায় পুলিশ কাউকে আটক করেনি।

বন্দর জোনের সহকারী কমিশনার মাহমুদুল হক বলেন, “ওনারা শান্তিপূর্ণ ছিলেন, আমাদের অনুরোধে আধা ঘণ্টা অবস্থান করে চলে যান।”

উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হায়দারাবাদ এলাকায় শিশু বলাৎকারের অভিযোগে একদল লোক মাওলানা রইস উদ্দিনকে গাছে বেঁধে মারধর করে। পরে পুলিশ তাকে আটক করে। ২৮ এপ্রিল ভোরে তিনি কারাগারে মারা যান।

ঘটনার পর থেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত টানা কর্মসূচি দিয়ে আসছে। শনিবার লালদীঘি মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ এবং রোববার ‘মার্চ টু গাজীপুর’ কর্মসূচির পর সোমবার ছিল তিন ঘণ্টার সড়ক অবরোধ কর্মসূচি।

ইএইচ