উদ্বেগে প্রশাসন

মাগুরা শহরে সৌন্দর্যবর্ধনের ফ্রেম থেকে রড চুরি

মিরাজ আহমেদ, মাগুরা প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ০২:৪৪ পিএম
মাগুরা শহরে সৌন্দর্যবর্ধনের ফ্রেম থেকে রড চুরি

মাগুরা জেলা শহরে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সড়ক বিভাজক ও পাশে স্থাপিত লোহার ফ্রেম থেকে ধারাবাহিকভাবে রড চুরির ঘটনা ঘটছে। এতে একদিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শহরের নান্দনিকতা, অন্যদিকে জননিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়েছে।

সম্প্রতি শহরের পুলিশ লাইন এলাকা থেকে পারনান্দয়ালী পর্যন্ত সড়ক বিভাজকে স্থাপিত লোহার ফ্রেমের ভেতরে বিভিন্ন শোভাবর্ধনকারী গাছ রোপণ করা হয়েছিল। কিন্তু সার্কিট হাউজ, স্টেডিয়াম গেট, ভায়না মোড়, পিটিআই ও পারনান্দয়ালী এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রাতে ধারাবাহিকভাবে এসব ফ্রেমের রড চুরি হয়ে যাচ্ছে।

মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য স্থাপিত ফ্রেমের একাধিক অংশ থেকে রড খোলা হয়েছে। এতে শুধু শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে না, বরং পথচারীদের জন্যও এটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মাসুদ রানা বলেন, “প্রথমে মনে হয়েছিল সংস্কারের জন্য খুলছে। কিন্তু প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও রড উধাও হয়ে যাচ্ছে। এটা পরিকল্পিত চুরি ছাড়া কিছু না। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”

স্টেডিয়াম এলাকায় গত ১৫ দিনের মধ্যে একটি চুরির ঘটনা প্রতিরোধ করে এলাকাবাসী এক চোর দলকে ধরে মারধরও করেছে। তবে চুরি থামেনি। শুধু বিভাজকের রড নয়, ভায়না মোড় এলাকার একটি নির্মাণাধীন স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশের লোহার গ্রিলও চুরি হয়ে গেছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, গত ৫ আগস্টের পর শহরে চুরি ও ছিনতাই বেড়ে গেছে। ১৫ থেকে ২৬ বছর বয়সী যুবকদের একাধিক দল চুরি করছে। শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে টিউবওয়েল, মোটর, কলাপসিবল গেট এমনকি দোকান থেকেও চুরি হয়েছে।

মাগুরা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান বারী বলেন, “আমরা চুরি রোধে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এ ধরনের কর্মকাণ্ড শহরের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে।”

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আইয়ুব আলী বলেন, “বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। কিছু সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। শিগগিরই অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) মাগুরার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাসেল বলেন, “সড়ক বিভাজক থেকে ধারাবাহিকভাবে রড চুরির ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক। এটি শুধু জননিরাপত্তার জন্য হুমকি নয়, বরং সরকারি সম্পদের অপচয়ও। আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছি এবং একটি তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে সিসি ক্যামেরা, নজরদারি বৃদ্ধি এবং স্থানীয়দের সহায়তায় নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। ভবিষ্যতে টেকসই ও চুরি প্রতিরোধী নির্মাণ উপকরণ ব্যবহারের দিকেও নজর দেওয়া হবে। জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ, কেউ এ ধরনের কাজ করতে দেখলে দ্রুত আমাদের জানিয়ে সহযোগিতা করুন।”

নাগরিকরা মনে করছেন, রাতের বেলা অতিরিক্ত টহল, সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং স্থানীয়দের সচেতনতা বাড়িয়ে চুরির ঘটনা রোধ করা সম্ভব।

ইএইচ