লক্ষ্মীপুরের আল-মুঈন ইসলামী একাডেমি থেকে হেফজ বিভাগের ছাত্র সানিম হোসাইন (৭)-এর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের অভিযোগ, শিক্ষক মাহমুদুর রহমানের মারধরের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে ঘটনার পর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দাবী করে, সানিম টয়লেটে ঢুকে আত্মহত্যা করেছে।
এ ঘটনায় শিক্ষক মাহমুদুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকার ওই মাদ্রাসা থেকে সানিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, গামছা হাতে সানিম টয়লেটে প্রবেশ করছে, তবে সেখান থেকে বের হওয়ার কোনো দৃশ্য পাওয়া যায়নি। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, তার মরদেহ ৩য় তলার টয়লেট থেকে নিচে নামানো হয়েছে, কিন্তু সেটির কোনো ভিডিও ফুটেজ দেখাতে পারেননি।
সানিমের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারে। তার বাবা-মা মাদ্রাসার মেঝেতে কান্নায় বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন।
নিহত সানিম রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের কুচিয়ামারা গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী হুমায়ুন মাতব্বরের ছেলে। তিনি ছিলেন একজন হাফেজ, ২০ পারা কোরআন মুখস্থ করেছিলেন।
সানিমের ফুফাতো ভাই বকশি মোহাম্মদ শাহেদ হোসাইন বলেন, “৩-৪ দিন আগে শুনি হুজুর নাকি সানিমের ওপর রেগে ছিলেন। মঙ্গলবার জানানো হয়, সে টয়লেটে গলায় ফাঁস দিয়েছে। কিন্তু আমরা মাদ্রাসায় গিয়ে মরদেহ টয়লেটে পাইনি, পেয়েছি নিচতলার একটি কক্ষে বিছানায়। আমরা নিশ্চিত, সানিমকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।”
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বশির আহমেদ বলেন, “ক্লাস শেষে নামাজ ও খাওয়ার বিরতির সময় সানিম টয়লেটে যায়। পরে সেখান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সিসি ক্যামেরায় টয়লেটে প্রবেশের দৃশ্য আছে।”
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল হক বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। মরদেহে গলায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কালো দাগ রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।”
ইএইচ