অভয়নগরে তীব্র তাপপ্রবাহ ও গরমে স্বস্তি পেতে রাস্তার পাশে ও ভ্যানে ঘুরে ঘুরে বিক্রি হওয়া রসালো তালশাঁসের দিকে ঝুঁকছেন ক্রেতারা। প্রচণ্ড গরমে পথচারীদের একটুখানি স্বস্তি এনে দিচ্ছে ঠাণ্ডা ও রসালো এই মৌসুমি ফল। সকালে শুরু হয়ে রাত পর্যন্ত চলে তালশাঁস বিক্রি। দিনে রোদের তীব্রতা যত বাড়ছে, তালশাঁসের চাহিদাও তত বাড়ছে।
তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ শরীরে পানির চাহিদা পূরণে সহায়ক হওয়ায় এর চাহিদা বেশি। কেউ তা সঙ্গে সঙ্গে খাচ্ছেন, কেউ আবার বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য।
বুধবার সকালে উপজেলার নওয়াপাড়া নূরবাগ বাজার, হাইস্কুল গেট, প্রফেসরপাড়া, শাহীমোড়, রেলওয়ে স্টেশন ও স্বাধীনতা চত্বরে বিক্রি হতে দেখা যায় তালশাঁস।
শংকরপাশা গ্রামের সোহাগ হোসেন বলেন, “বছরের প্রথম তালশাঁস খেলাম। পরিবারের জন্যও কয়েকটি কিনলাম। তবে আরো কিছুদিন পর আরও ভালো মানের শাঁস পাওয়া যাবে। এটি আমার অত্যন্ত প্রিয় ফল।”
একই এলাকার রুবেল কাজী বলেন, “তালের শাঁস লিভার, কোষ্ঠকাঠিন্য ও রক্তশূন্যতার জন্য উপকারী। তাই নিজেও খেলাম, পরিবারের জন্যও নিলাম।”
প্রফেসরপাড়া এলাকার তালশাঁস বিক্রেতা মৃদুলা বেগম বলেন, “স্বামী মারা গেছেন দুই বছর আগে। এখন তালশাঁস বিক্রি করে সংসার চালাই। প্রতিপিস কোয়া বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা করে, আর একটি তালে তিনটি কোয়া থাকলে দাম নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা পর্যন্ত। কেউ বেশি নিলে একটু ছাড় দিচ্ছি।”
শাহীমোড় এলাকার বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, “চার বছর ধরে গরম আসলেই তালশাঁস বিক্রি করি। একটি গাছ মৌসুমি চুক্তিতে এক হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়ে কিনি। ফল বেশি হলে দামও বেশি হয়। এখন থেকে বিক্রি শুরু করেছি, শাঁস শক্ত হওয়া পর্যন্ত চলবে।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. লাভলী খাতুন বলেন, “তালের ফল ও বীজ উভয়ই খাওয়ার উপযোগী। তালের শাঁস জনপ্রিয় একটি খাবার। জলবায়ু পরিবর্তন ও বজ্রপাত প্রতিরোধে তালগাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই সড়কের পাশে তালগাছ রোপণ করা হচ্ছে।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলীমুর রাজীব বলেন, “তালশাঁস মৌসুমি একটি উপকারী ফল। এতে থাকা ভিটামিন সি ও বি কমপ্লেক্স রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, রক্তশূন্যতা দূর করে ও খাবারে রুচি বাড়ায়। এছাড়া ত্বককে সুন্দর, উজ্জ্বল করে তুলতেও সাহায্য করে এই ফল।”
ইএইচ