মাগুরা জেলার ব্যস্ততম মহাসড়কে তিন চাকার অটোরিকশা চালকদের বেপরোয়া ও অনিয়ন্ত্রিত চালনায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। নিয়ম ভেঙে অনেকে ‘পা তুলে’ কিংবা এক হাত স্টিয়ারিংয়ে রেখে, এমনকি মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে যান চালাচ্ছেন। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয়দের ভাষায়, এই চালনা আর নয়, যেন চলছে রাস্তায় মৃত্যুর দৌড়।
শহরের হাজী রোড এলাকার বাসিন্দা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অটোরিকশা চলাচলে এখন কোনো নিয়ম নেই। চালকরা নিজেদের খেয়াল মতো চলেন, ফলে প্রতিদিনই জ্যামে পড়তে হয়।’
একই অভিযোগ স্কুলশিক্ষিকা আয়েশা মল্লিকের। তিনি বলেন, “নিজের চোখে দেখেছি—চালক দু’পা সিটে তুলে ‘স্টাইলে’ অটোরিকশা চালাচ্ছেন। ছাত্রছাত্রীরা আতঙ্কে রাস্তার পাশ থেকে সরে দাঁড়ায়। এটা কি চালনার ধরন?”
মাগুরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট—শালিখা আড়পাড়া রোড, ভায়না মোড়, ঢাকা রোড, চৌরঙ্গী মোড় ও নতুন বাজার এলাকায় প্রতিদিনই দেখা যায় এমন দৃশ্য। অথচ সড়ক পরিবহন আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে, চালনার সময় উভয় পা নিচে এবং দুই হাত স্টিয়ারিংয়ে রাখা বাধ্যতামূলক।
রাস্তায় দায়সারা অভিযান চলছে বলে জানালেন সদর ট্রাফিক বিভাগের ইন্সপেক্টর মো. ফরহাদ হায়দার। তাঁর ভাষায়, ‘আমরা মাঝে মাঝে অভিযান চালাই। তবে চালকরা পরে আবার আগের অভ্যাসে ফিরে যান। জনবল ও যানবাহনের অভাবে সবসময় নজরদারি সম্ভব হয় না।’
রিকশাচালক তোফায়েল মোল্লা বলেন, ‘গাড়ির ডিজাইনই এমন যে চালকদের পা তুলে চালাতে হয়। মালিকরাই এইভাবে তৈরি করে দেন।’
সচেতন নাগরিকদের দাবি, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে শুধু জরিমানা নয়, চালকদের প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স যাচাই কার্যক্রমও শুরু করা দরকার।
মাগুরা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদের বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
বিআরইউ