সন্দ্বীপে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট

ইলিয়াছ সুমন, সন্দ্বীপ প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৫, ০৭:২৮ পিএম
সন্দ্বীপে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট

পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনের আর মাত্র তিন দিন বাকি। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, ততই জমে উঠছে চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের কোরবানির পশুর হাটগুলো। শুরুর দিকে হাটগুলোতে কিছুটা ক্রেতাশূন্যতা থাকলেও এখন প্রতিটি হাটে উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে, তৈরি হয়েছে ঈদ-উৎসবমুখর পরিবেশ।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার অন্যতম বৃহৎ পশুর হাট—পণ্ডিতের হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটজুড়ে তিল ধারণের জায়গা নেই। কেউ এসেছেন একা, কেউবা পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে। চারপাশে গরুর ডাক, দরদাম আর ক্রেতাদের আনন্দ—সব মিলিয়ে এক উৎসবের আবহ।

এবারের হাটগুলোতে দেশি গরুর সরবরাহ চোখে পড়ার মতো। প্রতিটি হাটে গরুর সারি থাকলেও কোনো বিদেশি গরুর দেখা মেলেনি। তবুও ক্রেতাদের আগ্রহে ভাটা পড়েনি। কেউ পছন্দের পশু কিনে বাড়ি ফিরছেন, কেউ অপেক্ষা করছেন শেষ মুহূর্তের দামের ওঠানামার জন্য।

সন্দ্বীপ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আলী আজম জানান, “এ বছর সন্দ্বীপে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে, যেখানে চাহিদা প্রায় ৩৩ হাজার। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি পশু রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “দেশীয় খামারিরাই এই পশুগুলো সরবরাহ করছেন, যা আমাদের স্থানীয় অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক।”

পশুর হাটগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। সন্দ্বীপ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম শফিকুল আলম চৌধুরী প্রতিদিন বিভিন্ন হাট পরিদর্শন করছেন। তিনি বলেন, “প্রতিটি হাটে পুলিশের টহল টিম মোতায়েন রয়েছে, যাতে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না ঘটে।”

সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিগ্যান চাকমা জানান, “এ বছর সন্দ্বীপে ১৫টি পশুর হাট বসেছে। প্রতিটি হাটে প্রশাসনের মোবাইল টিম নিয়মিত টহল দিচ্ছে। এছাড়া ব্যাপারীদের পশু আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত নজরদারি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।”

সব মিলিয়ে ঈদুল আজহার আগে সন্দ্বীপের কোরবানির পশুর হাটগুলোতে অভাবনীয় প্রাণচাঞ্চল্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ, তুলনামূলক স্বাভাবিক দাম এবং প্রশাসনিক নিরাপত্তার কারণে বিক্রেতা ও ক্রেতা—উভয়ই সন্তুষ্ট। সংশ্লিষ্টদের মতে, এ বছর সন্দ্বীপের হাটগুলো সফল ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

ইএইচ