বাগেরহাটে দুপক্ষের সংঘর্ষে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন স্থগিত, আহত ৩০

বাগেরহাট প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৫, ০৫:৫৪ পিএম
বাগেরহাটে দুপক্ষের সংঘর্ষে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন স্থগিত, আহত ৩০

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পুটিখালী ইউনিয়ন বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে দুই সভাপতি প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। 

রোববার দুপুরে চরপুটিখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ।

প্রত্যক্ষদর্শী নেতাকর্মীদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী বেলা ১১টায় সম্মেলন শুরু হয়। মঞ্চে একে একে বক্তৃতা চলছিল। এক পর্যায়ে ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল হালিম খোকনের বক্তব্য চলাকালে সভাপতি পদপ্রার্থী খলিলুর রহমান শিকদার ও আব্দুস ছত্তার হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। মুহূর্তেই তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়া হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আসলে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন।

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং গুরুতরদের বাগেরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে নাম পাওয়া গেছে বিএনপি কর্মী শিহাব শিকদার, এমদাদুল হাওলাদার, সাইফুল হাওলাদার, অহিদুল ইসলাম ও মো. হালিম।

সভাপতি প্রার্থী আব্দুস ছত্তার হাওলাদার অভিযোগ করেন, “সাবেক ছাত্রদল নেতা আব্দুল হালিম খোকন মূলত খলিলুর রহমান শিকদারের আত্মীয়। তার পক্ষ নিয়েই বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, কমিটি নিয়ে আগে সমঝোতা হয়েছিল, এখন আবার নির্বাচন প্রয়োজন নেই। এই বক্তব্যে আমাদের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হন। এক পর্যায়ে খলিলুর রহমান শিকদারের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়।”

অন্যদিকে সভাপতি প্রার্থী খলিলুর রহমান শিকদার দাবি করেন, “আমাদের প্রকৃত কাউন্সিলরদের বাদ দিয়ে নতুন ভোটার তালিকা করা হয়েছে। আমাদের পরাজিত করতে ষড়যন্ত্র হয়েছে। সম্মেলনে বক্তৃতার সময় আমাদের নেতাকর্মীরা একজন নেতার বক্তব্যে সমর্থন দিলে, আব্দুস ছত্তারের অনুসারীরা আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে আমাদের অন্তত ২০ জন কর্মী আহত হন।”

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে ঘটনাস্থলের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা শান্ত থাকুন। আমরা সম্মেলন স্থগিত করছি। পরবর্তীতে নতুন তারিখ অনলাইনে জানিয়ে দেওয়া হবে।”

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল আরিফ বলেন, “সংঘর্ষের কারণে বিএনপি নেতারা সম্মেলন স্থগিত করেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।”

ইএইচ