মাগুরায় মহাসড়কের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, প্রশাসনের নীরবতা

মিরাজ আহমেদ, মাগুরা প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৫, ০৫:২০ পিএম
মাগুরায় মহাসড়কের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, প্রশাসনের নীরবতা

মাগুরা শহরের ব্যস্ততম মহাসড়কের পাশে সরকারি অধিগ্রহণকৃত জমিতে একের পর এক অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। 

জেলা গণপূর্ত অফিস ও বীজ বিপণন কেন্দ্রের সামনের অংশে ছাত্রলীগের অফিস এবং সদর হাসপাতালের সামনের সড়কজুড়ে দোকান ও কাঠামো নির্মাণ করে দখলদারির ঘটনা স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশে সরকারি সীমানা চিহ্ন থাকা সত্ত্বেও তার ওপরেই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। বিশেষ করে সদর হাসপাতালের মূল ফটকের বিপরীতে সড়কের ওপর দোকানঘর, চায়ের স্টল ও ছাউনি গড়ে তোলা হয়েছে। 

অথচ এসব জমি সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের মালিকানাধীন বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

স্থানীয় এক দোকানি শহিদুল ইসলাম বলেন, “যদি একজন প্রভাবশালী নেতা সরকারি জায়গায় ছাত্রলীগ অফিস করতে পারেন, তাহলে আমি কেন ফুটপাতে দোকান বসাতে পারব না?”

আরেক পথচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আইনের সমতা কেবল কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ। বাস্তবে কেউ কেউ আইনের ঊর্ধ্বে।”

বীজ বিপণন অধিদপ্তরের যশোর অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. হাফিজ বলেন, “আমাদের অফিসের সামনের স্থাপনাটি আমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। এটি স্থানীয় ছাত্র সংগঠনের দখলে রয়েছে। আমরা মৌখিকভাবে জানিয়েছি, তবে জমিটি সড়ক বিভাগের আওতাধীন হওয়ায় বিষয়টি তাদের এখতিয়ারে পড়ে।”

মাগুরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস ফারুক বলেন, “এই ধরনের অবৈধ স্থাপনা ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী মহলের হস্তক্ষেপের কারণে অনেক সময় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। আমরা নিয়মিত জেলা প্রশাসনকে অবহিত করছি।”

এ বিষয়ে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাসেল বলেন, “মহাসড়কের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ সম্পূর্ণ বেআইনি। ইতোমধ্যে উচ্ছেদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে এবং খুব শিগগিরই জেলা প্রশাসনের সহায়তায় অভিযান চালানো হবে। কোনোভাবেই সরকারি জমি দখল করতে দেওয়া হবে না।”

পৌরবাসীদের অভিযোগ, সাধারণ মানুষ সামান্য জায়গা দখল করলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করে, অথচ বছরের পর বছর ধরে গড়ে ওঠা এসব অবৈধ স্থাপনায় কেউ হাত দেয় না। শহরের এক প্রবীণ নাগরিক বলেন, “যদি সরকারি জমি দখলের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ না হয়, তাহলে আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ হয়।”

ইএইচ